শনাক্ত হলেও হস্তান্তর হয়নি বিএসএফের গুলিতে নিহত মিনারুলের লাশ, মামলা

বিএসএফের গুলিতে নিহত মিনারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর সদর উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি স্কুলছাত্র মিনারুল ইসলামের (১৬) মৃত্যুর তিন দিন পেরিয়ে গেছে। এ নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে। লাশ শনাক্তের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে দুই বাহিনী। কিন্তু লাশ এখনো হস্তান্তর করেনি বিএসএফ।

এদিকে মিনারুলকে কাজ দেওয়ার কথা বলে চোরাচালানের পণ্য আনার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে উল্লেখ করে শনিবার সকালে পাঁচজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ করেছেন মিনারুলের মা মিনারা বেগম।

আরও পড়ুন

মিনারুলের চাচাতো ভাই রুবেল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বিকেলে মিনারুলের বাবা বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) দাইনুর বিওপিতে ছেলের ছবিসহ প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র জমা দিয়েছেন। বিজিবির কাছে পাঠানো বিএসএফের ছবি ও তথ্যের সঙ্গে মিনারুলের পরিবারের দেওয়া সবকিছুর মিল পেয়েছেন তাঁরা। তবে লাশ কখন হস্তান্তর হবে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি বিজিবি কর্তৃপক্ষ।

নিহত মিনারুল উপজেলার কমলপুর ইউনিয়নের খানপুর ভিতরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। সে খানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি রংমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করত মিনারুল। চার ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়।

গত বুধবার বিকেলে রঙের কাজ করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় মিনারুল। গত বৃহস্পতিবার সকালে তার পরিবার জানতে পারে, বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে একই ইউনিয়নের দাইনুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবি দাইনুর বিওপি ক্যাম্পের এক সদস্য বলেন, বিজিবি ও বিএসএফ মিনারুলের লাশ শনাক্তের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আজ দুপুরে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকও হয়েছে। আরও কিছু আইনি প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে। তবে লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

আজ দুপুরে মিনারুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর স্বজনেরাসহ আশপাশের এলাকা থেকে আসা শত শত মানুষ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা লাশের অপেক্ষা করছেন।

আরও পড়ুন

মিনারুলের মায়ের করা অভিযোগে যে পাঁচজনের নামোল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন উপজেলার খানপুর গ্রামের মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে সুমন (৩৫), একই গ্রামের আতাবুল ইসলামের ছেলে এন্তাজুল হক (৩৪), সালমান শাহর ছেলে সাগর হোসেন (২২), আনিসুর রহমানের ছেলে ফাতাউর (৩৮) এবং খানপুর ফকিরপাড়া এলাকার হুসেন আলীর ছেলে মোসলেম উদ্দিন (৩০)।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। লাশ গ্রহণ ও যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’