পুলিশ পরিচয়ে বিয়ে; পরে জানা গেল, তিনি দাগি আসামি

নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেওয়া এনামুল হক
ছবি: সংগৃহীত

নিজেকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে বিয়ে করার দুই দিন পর জানা গেল, তিনি আসলে পুলিশের কেউ নন। এ খবর পেয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ আজ সোমবার ভোরে ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে। ওই ব্যক্তি কয়েকটি মামলার আসামি বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান জানান, আটক ব্যক্তি ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে প্রথমে নিজেকে মনির খান বলে পরিচয় দেন। পরে তাঁর সম্পর্কে জানার জন্য পুলিশের সিডিএমএস (ক্রিমিনাল ডেটা ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। সেখানে তাঁর নাম এনামুল হক মনির খান বলে পাওয়া যায়। বাড়ির ঠিকানা পাওয়া যায় একাধিক। একটি নেত্রকোনা সদরের নাগড়া মহল্লায়, অপরটি একই জেলার পূর্বধলা উপজেলার হিরণপুর গ্রামে। তবে তাঁর নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা, ছিনতাইয়ের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

বিয়ের বিষয়ে অবগত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জনৈক ব্যক্তির মেয়েকে দুই দিন আগে পুলিশের এসআই পরিচয়ে বিয়ে করেন এনামুল হক। ওই বিয়ে নিয়ে গ্রামে কানাঘুষা শুরু হয়। বিয়ের পর গ্রামে ঘুরতে বের হলে এনামুল হক নিজেকে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বলে পরিচয় দেন। গ্রামের লোকজনকে তিনি নিজের পরিচিতি কার্ড (ভিজিটিং) বিতরণ করেন। এই পরিচয় পাওয়ার পর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। এনামুলের একটি কার্ড পান ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো. ওমর ফারুক।

ওমর ফারুক বলেন, রাতে টহলে থাকার সময় রোববার শেষরাতের দিকে তিনি কথিত দারোগার খোঁজে যান। এ সময় এনামুল হক মনির খানের সঙ্গে দেখা হলে তিনি নিজেকে ভৈরব থানায় কর্মরত এসআই বলে পরিচয় দেন। একপর্যায়ে নিজের কাছে থাকা এসআইয়ের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) প্রদর্শন করেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই ওমর ফারুক কার্ডে থাকা পরিচিতি নম্বরটি সংগ্রহ করে ভৈরব থানায় যোগাযোগ করেন। জানতে পারেন, এই নামে কেউ সেখানে কর্মরত নেই। পরে কঠোর জেরার মুখে এনামুল হক স্বীকার করেন, তিনি আসলে পুলিশের কেউ নন। বিয়ে করার জন্য পুলিশ পরিচয় ব্যবহার করেছেন। পরে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মাজেদুর রহমান বলেন, তাঁকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও রাজধানীর শাহ আলী থানায় ছিনতাইয়ের মামলা এবং ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় ২০১৬ সালে ছিনতাই করার সময় হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। তাঁর সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তিনি এসব প্রতারক সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।