চুয়াডাঙ্গায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টা, জড়িতদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেকেন্দার আলী মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ও সোহরাব হোসেন খানকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগ ও চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশন, জীবনগর, চুয়াডাঙ্গার পক্ষ থেকে আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে এ সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় (আলটিমেটাম)।

আজ বিকেলে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আগামীতে উপজেলার সব জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন,মৌন মিছিল, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সংবাদ সম্মেলন আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ২৮ জুন রাতে মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান বৃহত্তর উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন খানকে এবং ২৮ মে উথলী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হান্নানকে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এসব ঘটনায় জীবননগর থানায় দুটি মামলা হলেও পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এর প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. সেকেন্দার আলী মিয়া। এ সময় জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম (ইশা), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেণুকা বেগম, পৌর মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম, কেডিকে (খয়েরহুদা, দেহাটী, কাশিপুর) ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল কবীর (শিপলু) সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

লিখিত বক্তব্যে সেকেন্দার আলী বলেন, ২৮ জুন রাতে মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে প্রথমে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে ২৮ মে বেলা ১০টায় উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হান্নানকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও পরে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জীবননগর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। মাদকের ছড়াছড়ি, চুরি, ছিনতাই, ইজিবাইক চুরি ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য বহুগুণে বেড়ে গেছে। এ ছাড়া উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হান্নানের ওপর হামলাকারীদের পুলিশ গত এক মাসেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এসব কারণে জীবননগর উপজেলার জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক-হতাশা বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘এসব ঘটনায় আমরাও আতঙ্কের মধ্যে থাকি, কখন আমাদের ওপর হামলা হয়। দুজন চেয়ারম্যানের ওপর হামলাকারী দুর্বৃত্তদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার এবং দুটির ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’