পার্বত্য চট্টগ্রামে ইকো ট্যুরিজম হলে স্থানীয় বাসিন্দারা উচ্ছেদের শিকার হয়: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বক্তব্য দেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যছবি: সুপ্রিয় চাকমা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ইকো ট্যুরিজম বাস্তবায়ন করলে স্থানীয়ক বাসিন্দারা উচ্ছেদের শিকার হয়। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাঙামাটিতে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক্‌–নির্বাচনী উদ্যোগ, আঞ্চলিক পরামর্শ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানে এ অঞ্চলের মানুষের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে, স্থানীয় বৈশিষ্ট্যের প্রতি মনোযোগী হয়ে পথরেখা বের করতে হবে। এই পথরেখার মূল উপাদান হিসেবে ভূমি সংস্কার ও স্থানীয় সরকার সংস্কারের বিষয়টি থাকতে পারে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় সংহতির বিষয়টিকে নির্বাচনী ইশতেহারে স্থান দিতে হবে। পথরেখায় উপস্থাপন করতে হবে। যদি এটার সমাধান না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে দেশ হিসেবে আমরা দুর্বল হয়ে যাব।’

সভায় চাকমা সার্কেলের রানি য়েন য়েন বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্যে পৌঁছানো অসম্ভব। পার্বত্য চট্টগ্রামে মব ভায়োলেন্সের কারণে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মিটিং বারবার স্থগিত করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী রাঙামাটি জেলা শাখার সেক্রেটারি মনসুরুল হক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৪টি জনগোষ্ঠী বসবাস করে। তার মধ্যে চাকমা ও বাঙালি সংখ্যায় বেশি। জনসংখ্যা অনুপাতে সমস্যা সমাধান করতে হবে। যেসব জাতিগোষ্ঠী সংখ্যায় কম, তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটা চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তি পরিস্থিতি অনুসারে রিভাইজ হতে পারে। নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়ানো দরকার। সেটি হতে পারে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, সেনাবাহিনী।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। ২৬ বার বৈঠকের পর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর তিন পার্বত্য জেলা থেকে আগত অংশীজনেরা তাঁদের মতামত প্রকাশ করেন। পাহাড়ি ও বাঙালি—উভয় সম্প্রদায়ই তাদের অধিকার ও দাবিদাওয়া তুলে ধরেন।

নাগরিক প্ল্যাটফর্ম নেটওয়ার্কের তারাননুম জিনানের সঞ্চালনায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান, কাপেং ফাউন্ডেশনের পল্লব চাকমা, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ বাঞ্ছিতা চাকমা, সুস্মিতা চাকমা, জেলা পরিষদের সদস্য নাইউপ্রু মারমা, সুজনের সভাপতি জিশান বখতেয়ার, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা ও তিন পার্বত্য জেলা থেকে আগত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।