‘সরকার নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে’

ত্বকী হত্যার চিহ্নিত ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে মোমশিখা প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রাথম আলো

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১২৮ মাস উপলক্ষে আয়োজিত মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, ১৬৪ ধারায় নাম আসার পরও ঘাতককে গ্রেপ্তার করা হয় না—এমন উদাহরণ ত্বকী হত্যার ক্ষেত্রে ছাড়া আর কোথাও নেই।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালনের সময় তাঁরা এই অভিযোগ করেন।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নিহত ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সংগঠক এস এম কাদির, সাংস্কৃতিক জোটের সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।

রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সরকার জনগণের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছে। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, জনগণের ভোটাধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে। সরকার ত্বকীর ঘাতকদের নিরাপত্তাদানের মধ্য দিয়ে দেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রতিষ্ঠা করেছে। সরকার নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।’

রফিউর রাব্বি আরও বলেন, ত্বকী হত্যার ১১ বছর হতে চলল, অথচ তৈরি হয়ে থাকা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হলো না। আগামী নির্বাচনে মানুষ বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ভোট দেবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে, মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে, ভাত ও ভোটের অধিকারের পক্ষে ভোট দেবে।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয়নি।

ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।