মাগুরায় মশার কয়েলের আগুনে পুড়ে প্রাণ গেল বিদ্যালয়ছাত্রের

মশার কয়েল থেকে আগুন লেগে দুটি ঘর ভস্মীভূত হয়েছে। ছয়টি ছাগল ও একটি গাভির পাশাপাশি পুড়ে মারা গেছে মিরাজ মোল্লা নামের এক বিদ্যালয়ছাত্র। আজ সকালে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামেছবি: প্রথম আলো

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় আগুনে পুড়ে মিরাজ মোল্লা (১৪) নামের এক বিদ্যালয়ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মিরাজ বাগবাড়িয়া গ্রামের ফয়জুর মোল্লা ও সেলিনা বেগমের ছেলে। সে চরগোয়ালপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিরাজের বাবা ফয়জুল ঢাকায় থাকেন। গ্রামের বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন সেলিনা বেগম। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে বড় ছেলেকে নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে যান সেলিনা। এ সময় পাটকাঠির বেড়া দেওয়া একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিল মিরাজ। সেলিনা বেগম খবর পান বাড়িতে আগুন লেগেছে। প্রতিবেশীরা সবাই মিলে আগুন নিভিয়ে দেখেন আগুনে পোড়া কিশোর মিরাজের মরদেহ পড়ে আছে। আগুনে গোয়ালঘরে থাকা একটি গাভি ও ছয়টি ছাগল পুড়ে মারা গেছে।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আলী সাজ্জাদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। আগুনে ছেলেটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফয়জুল মোল্লার তিনটি ঘরের মধ্যে দুটি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে সকালে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছেন তিনি। ছেলের মৃত্যুতে তিনি নির্বাক হয়ে পড়েছেন। আর তাঁর স্ত্রী সেলিনা বেগম আহাজারি করেই চলেছেন। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘রাতে খায়ে বড় ছেলে বাইরে যায়। আমিও কাজে পাশের বাড়িতে যাই। কিছুক্ষণ পরেই দেখি আগুন লাগিছে। আমি ভাবছিলাম আমার বুকের ধন (মিরাজ) মনে হয় বাইরে আছে। কিন্তু পরে দেখলাম পুড়ে সব শেষ। ছেলেটা মনে হয় ঘুমায়া গিছিল। আগুনি আমার সব কিছু নিয়ে গেল। এ যন্ত্রণা আমি কীভাবে সহ্য করব?’