বিড়ালছানা উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু

ছাদের ওপর দিয়ে টানা বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে শিশুটি মারা যায়। গতকাল রোববারছবি: প্রথম আলো

নাটোরের বড়াইগ্রামে শখের বিড়ালছানা উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুঁথি আক্তার (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
যুঁথি ওই এলাকার মাছ ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, যুঁথি শখ করে কিছুদিন ধরে একটি বিড়ালছানা পুষছিল। রোববার দুপুর থেকে বিড়ালটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে যুঁথি তাদের একতলা বাড়ির চিলেকোঠায় বিড়ালছানাটি দেখতে পায়। কাউকে না জানিয়ে সে বিড়ালছানাটি উদ্ধার করতে চিলেকোঠায় ওঠে। এ সময় অসাবধানবশত ছাদের ওপর দিয়ে টানা বিদ্যুতের তারে সে স্পৃষ্ট হয়। বিকট শব্দ শুনে স্বজনেরা বাঁশের লাঠি নিয়ে সেখানে ছুটে যান। লাঠি দিয়ে আঘাত করে যুঁথির দেহ বিদ্যুতের তার থেকে আলাদা করা হয়। তবে তখনো তারের সঙ্গে লেগে ছিল শিশুটির মাথার কিছু চুল। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যুতে মা–বাবাসহ স্বজন ও প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় শোক নেমে আসে।

যুঁথির বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিড়ালছানাটি আমার মেয়ের খুব আদরের ছিল। দুপুর থেকে সেটিকে না পেয়ে সে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছিল। সবার অগোচরে সে ছাদের ওপরের টিনের কক্ষে বিড়ালটিকে দেখতে পায়। কাউকে না বলে নিজেই উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।’

বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের লাইনের নিচে অবকাঠামো নির্মাণ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকেই বিষয়টি উপলব্ধি করেন না। অথচ এমন একটি ভুলের কারণে যুঁথিকে প্রাণ দিতে হলো। এটা সত্যিই মর্মান্তিক।

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক সুমন চন্দ্র দাস বলেন, বাড়ির ওপর দিয়ে যাওয়া হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকির বিষয়টি বুঝতে না পারায় শিশুটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। রোববার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।