‘আমরা বরগুনাবাসী বাসমালিক ও শ্রমিকদের সিন্ডিকেটে জিম্মি’

ধর্মঘটের কারণে বরগুনায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে সব বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। গতকাল সোমবার সকালে বরগুনা কেন্দ্রীয় পৌর বাসস্ট্যান্ডেছবি: প্রথম আলো

৩৪ ঘণ্টা পর বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে বরগুনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি। আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে বরগুনা পৌর বাস টার্মিনালে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা। এরপর বরগুনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোস্তফা বলেন, গত রোববার রাত ১০টার দিকে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছগীর হোসেনকে মারধর করা হয় ও তাঁর অফিসকক্ষ ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে বরগুনায় দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ পথের সব বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। তাঁদের দাবি ছিল, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসানকে পদ থেকে বহিষ্কার ও মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা। পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন বৈঠক করে ইমাম হাসানকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও সাংগঠনিক নিয়মে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের অনুরোধ ও পুলিশ থেকে বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

আরও পড়ুন

তুচ্ছ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের কারণে ধর্মঘট ডাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কথায় কথায় এমন ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি বাসমালিক ও শ্রমিকদের ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ বলছেন যাত্রীরা।

বরগুনার উপজেলা খাজুরতলা গ্রামের বাসিন্দা বশির আহমেদ বলেন, ‘আমরা বরগুনাবাসী বাসমালিক ও শ্রমিকদের সিন্ডিকেটে জিম্মি। তাঁরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে তাঁরা যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখছেন, কথায় কথায় ধর্মঘট ডাকছেন। এতে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। পরিবহন মালিক সমিতির সেক্রেটারি আর শ্রমিক সমিতির সেক্রেটারি ব্যক্তিস্বার্থের দ্বন্দ্বে মারামারি করলেন, অথচ ভোগান্তি হলো সাধারণ মানুষের।’

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরগুনার সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছগীর হোসেনের প্রাইভেট কারে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসানের ব্যানার পড়ে রং উঠে গিয়েছিল। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্বে বিরোধ ও মারামারি। এতে জনগণের কী দোষ? অথচ ভোগান্তিটা পোহাতে হলো জনগণকে। এটা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতার মাধ্যমে ধর্মঘট প্রত্যাহার করাতে রাজি করিয়েছি। আশা করছি পরবর্তী সময়ে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।’