প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের পলিসিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা আবশ্যক: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘যেকোনো উপায়েই হোক, প্রাথমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীর অন্তত মৌলিক সাক্ষরতা অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। আর কাজটি আপনারা যাঁরা শিক্ষকমণ্ডলী, তাঁদেরই করতে হবে। আমাদের ভর্তির হার বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছুদিন পর বিদ্যালয় থেকে আবার ছাত্রসংখ্যা কমেও যাচ্ছে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
আজ শনিবার সকালে ময়মনসিংহে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিতে (নেপ) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক কার্যালয়ের আয়োজনে ও ইউনিসেফ, বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোশ্যাল মোবিলাইজেশন অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এ কথা বলেন। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় এ কর্মশালা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সমাজের চাহিদা অনুযায়ী আমরা বাচ্চাদের কতটুকু সাক্ষর করে গড়ে তুলতে পারছি, সেটা দেখা উচিত। প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের পলিসিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। আমরা সে জায়গাটিতে কাজ করছি। আপনাদের সুচারু মতামত সরকারের কাছে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। অতিকেন্দ্রিকতার কারণে আমরা সামগ্রিকভাবে অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারি না। কিন্তু পরিবর্তন আনার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শতভাগ চেষ্টা রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক স্থানীয় সমস্যা রয়েছে, যেটা জেলাভিত্তিক সমাধান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে শুধু একটা সাধারণ নীতিমালা নির্ধারণ করে দিলেই হয়। সর্বোপরি সমস্যাটা আপনার কাছে আসবে, সেটার সমাধান ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে পরামর্শ করে করতে হবে, বাস্তবায়নটাও আপনাকেই করতে হবে।’
বিধান রঞ্জন রায় আরও বলেন, ‘জনমত নিয়েই প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের পলিসি গঠন হবে। চরাঞ্চলের শিশুদের জন্য স্কুলের সুবিধা কীভাবে হয়, দুর্গম অঞ্চলের স্কুলের সুবিধা কী হবে, এটা স্থানীয় ব্যক্তিদের মতামত অনেকটাই জরুরি। শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করলেই হবে না, শিক্ষাটা সমাজের কতটুকু উপকারে আসছে, সেটা ভাবার বিষয়। আমরা প্রাইমারি পর্যায়ে লাইব্রেরির অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য বাড়তি বই পড়া খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজনে বাইরে থেকে আমরা মালামাল ও সেবা, ক্রয় বা সরবরাহ করতে পারি।’ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. লুৎফুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরহাদ আলম প্রমুখ।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ময়মনসিংহ বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। এর আগে উপদেষ্টা নেপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।