ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ

সড়ক নষ্টের অজুহাতে নাকুগাঁও দিয়ে ভারতের পাথর বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে তিন মাস ধরে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ। ফলে ফাঁকা হয়ে পড়েছে বন্দরটি। গতকাল দুপুরে বন্দর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ভারতের ডালু এলাকায় ভারী বর্ষণে সড়ক নষ্ট হওয়ার অজুহাতে প্রায় তিন মাস ধরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি করতে পারছেন না। ফলে বিপাকে পড়েছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। হাতে কাজ না থাকায় বন্দরের প্রায় তিন হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

একই সড়ক ধরে ভুটানের পাথর আমদানি করা যাচ্ছে। কিন্তু সড়ক নষ্টের অজুহাতে নাকুগাঁও দিয়ে ভারতের পাথর বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

নাকুগাঁও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে কার্যক্রম শুরু করা হয়। ভারত থেকে ২১টি পণ্য আমদানি করার সুযোগ থাকলেও ভারত ও ভুটান থেকে শুধু পাথর আমদানির মাধ্যমে বন্দরটি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এই বন্দরে বর্তমানে সমিতির অন্তর্ভুক্ত ২৫০ জন আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী রয়েছেন। এই পাথরভাঙা কাজে তিন হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক ব্যবসায়ী ভারতের পাথর আমদানি করতে এলসি করেছেন। কিন্তু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত কারণ দেখিয়ে ডালু আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানি করছেন না।

গত ১০ জুলাই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলার ডালু আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি পক্ষ থেকে সেখানে সড়ক সংস্কারের কথা বলে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরাও ভারতের পাথর এলসি করেও নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমদানি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। তবে ভারত হয়ে ভুটানের পাথর আমদানিতে কোনো বাধা নেই। প্রায় তিন মাস ধরে পাথর আমদানি করতে না পারায় এই বন্দরের অধিকাংশ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

এ নিয়ে নাকুগাঁও আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ডালু আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী সমিতির মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেখানকার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় পাথর নিয়ে গাড়ি চলাচলের কারণে বর্ষায় সড়ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় এই সড়ক দিয়ে ভারতের পাথর রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে।

নাকুগাঁও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুলাই থেকে ভারতের পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে ভারত হয়ে ভুটান থেকে ১০ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন পাথর আমদানি করা হয়েছে।

২৬ সেপ্টেম্বর শেরপুরের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের বাণিজ্য উন্নয়নে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ। এ সময় আলোচকেরা দ্রুত ভারত-বাংলাদেশের নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নাকুগাঁও সমিতির আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,  ভারত থেকে পাথর আমদানি প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ভারতের পাথর আমদানি করতে একাধিকবার ডালু বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ধরেন সাংমার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কথা বলেন।