আত্রাইয়ে বিপৎসীমার ওপরে পানি, রানীনগরে পানিবন্দী হাজারো মানুষ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকায় বাঁধ উপচে পানি পাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। বৃহস্পতিবার তোলা
ছবি: প্রথম আলো

নওগাঁর আত্রাই ও রানীনগরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নতুন করে আত্রাইয়ে নদের পানি উপজেলার বলরামচক এলাকায় বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার আত্রাই নদের নন্দনালী ও জগদাস এলাকায় বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। মূলত গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আত্রাই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে পড়ে পানি জনবসতি এলাকায় প্রবেশ করে নদের তীরের প্রায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আত্রাই উপজেলার জগদাশ ও শিকারপুর এলাকার দুই স্থানে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে গতকাল সকালে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়কের নন্দনালী এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। একপর্যায়ে ভাঙনের শুরু হলে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে স্থানীয় লোকজন বাঁশ পাইলিং করে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করেন। এদিকে নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদের তীরবর্তী নন্দনালী, শলিয়া, তাড়ানগর, রায়পুর, আটগ্রাম, ডাঙ্গাপাড়া, রসুলপুর, জাতোপাড়া, জাতআমরুল জিয়ানীপাড়া, শিবপুর, জগদাস, পারমোহনঘোষসহ প্রায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন।

গতকাল সকালে রানীনগরে ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর এলাকায় স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে কয়েক শ হেক্টর জমির আউশ ও আমন ধানের খেত। দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।
রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, প্রেমতলীসহ কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ায় মাঠে থাকা কাঁচা মরিচ, পটোল, শীতের সবজির বাগান পানিতে তলিয়ে গেছে।

আত্রাইয়ের ইউএনও সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। কোথাও বাঁধ ভেঙে কৃষকের যেন ফসলহানি না হয়, এ জন্য সার্বক্ষণিক আমরা পর্যবেক্ষণে রয়েছি। পানিবন্দী মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।’

নওগাঁ পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, গত রোববার সকাল থেকে আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আত্রাই নদের শিমুলতলী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ দশমিক ৪৬ সেমি ও জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ দশমিক ৯২ সেমি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।