বলেশ্বরের পেটে চলে যাচ্ছে সড়ক

পৌরসভার খুমুরিয়া-মুক্তারকাঠি সড়কের ২০০ ফুট বলেশ্বর নদে ধসে পড়েছে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে সড়কটি নদে বিলীন হয়ে যাবে।

পিরোজপুর পৌরসভায় বলেশ্বর নদের ভাঙনের কবলে পড়ে মুক্তারকাঠী সড়কের একাংশ নদে বিলীন হয়ে গেছে। সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: এ কে এম ফয়সাল

বলেশ্বর নদের ভাঙনে পিরোজপুর পৌরসভার মুক্তারকাঠী সড়কের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে। এতে সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে পুরো সড়কটি ভেঙে যাবে। এতে পৌরসভার চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বলেশ্বর নদের তীর ঘেঁষে পিরোজপুর পৌরসভার খুমুরিয়া, মুক্তারকাঠী ও খানাকুনিয়ারি গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে খুমুরিয়া-মুক্তারকাঠী সড়ক। দুই সপ্তাহ আগে মুক্তারকাঠী গ্রামের শুক্কুর আলী শেখের বাড়ির সামনের পাকা সড়কের একাংশ বলেশ্বর নদের ভাঙনের কবলে পড়ে। ইতিমধ্যে সড়কের ওই অংশের ২০০ ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। সড়কের আরও কিছু জায়গায় ফাটল ধরেছে। সড়কটি দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ পিরোজপুর শহর, অফিস–আদালত, হাটবাজার ও হাসপাতালে যাতায়াত করেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, পাকা সড়কের ২০০ ফুট জায়গা ভেঙে নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে যাওয়ায় সড়ক সরু হয়ে গেছে। সরু পথ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সড়কের ভাঙা অংশের আশপাশে ফাটল ধরেছে।

মুক্তারকাঠী গ্রামের বাসিন্দা ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলচালক মো. সেলিম শেখ বলেন, সড়কটি দিয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে মুক্তারকাঠি, নিমা, খানাকুনিয়ারী ও পোরগোলা গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ চলাচল করেন। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে সড়কটির একাংশ ভেঙে নদে বিলীন হয়ে যাবে। সড়কটি ভেঙে গেলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

মুক্তারকাঠী গ্রামের কৃষক শুক্কুর আলী শেখ বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনের সড়ক নদে ভেঙে যাচ্ছে। আশপাশের কিছু এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন বন্ধ করা না গেলে সড়কের পর আমাদের বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

এই সড়কে ইজিবাইক চালান মো. হৃদয়। ওই সড়কের খারাপ অবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, সড়কটির একাংশ ভেঙে যাওয়ায় যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় একটি গাড়ি যাওয়ার সময় অন্য গাড়ি অপেক্ষা করতে হয়। রাতে ভাঙা সড়ক দিয়ে খুব সাবধানে চলাচল করতে হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, কয়েক বছর ধরে বলেশ্বর নদ ভাঙছে। নদের পাশ দিয়ে চলে যাওয়ায় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে সড়কটি। ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

পিরোজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দ্যুবা লাল দত্ত বলেন, ‘মুক্তারকাঠী এলাকায় নদের ভাঙন রোধে গাইড ওয়াল দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নদের ভাঙন রোধে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে আমরা সড়কটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেব। ভাঙন রোধ না করা পর্যন্ত সড়কটি মেরামত করা যাচ্ছে না।’

পাউবো পিরোজপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইর হোসেন বলেন, ‘আমরা পৌরসভার চিঠি পেয়েছি। তবে বলেশ্বর নদের ভাঙনকবলিত এলাকায় গাইড ওয়াল দেওয়ার জন্য আমাদের কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। অর্থ বরাদ্দ পেলে নদের ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়া হবে। তবে আমরা জরুরি ভিত্তিতে কিছু করার চেষ্টা করব।’