মানিকগঞ্জে বিরোধে জড়ালেন আ. লীগের দুই নেতা

ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বস্ত্রমন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল (অব.) আবদুল মালেকের স্মরণসভায় মানিকগঞ্জে দলের জ্যেষ্ঠ দুই নেতা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আজ শনিবার দুপুরে শহরের সাবিস মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত কর্নেল (অব.) আবদুল মালেকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ দুই নেতার মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জেলা শহরের কালীবাড়ি এলাকায় সাবিস মিলনায়তনে আজ শনিবার এ সভার আয়োজন করা হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খানের মধ্যে এ হট্টগোল হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কর্নেল (অব.) আবদুল মালেক জাতীয় পার্টির সময়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের (সদর ও সাটুরিয়া) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ওই সময় এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রমজান আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আবদুর ওহাব খান নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের ১৬ জুলাই আবদুল মালেক মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাবা।

আজ বেলা ১১টার দিকে সাবিস মিলনায়তনে আবদুর মালেকের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বক্তব্য দেন।

সভায় উপস্থিত দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান স্মরণসভায় বলেন, ১৯৯৮ সালে উপনির্বাচন কর্নেল (অব.) আবদুল মালেক আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে সামান্য ভোটে হেরে যান। ওই সময় বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর মেয়র রমজান আলী মালেকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন। এ বক্তব্যে মেয়র রমজান আলী ক্ষুব্ধ হন। এরপর রমজান আলী তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সুলতানুল আজম খানের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনিও তো সে সময় কর্নেল মালেকের ছবি পদদলিত করেছেন।’

এ বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে সুলতানুল আজম খানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে সুলতানুল আজম খান ও রমজান আলী নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। পরে দল রমজান আলীকে মনোনয়ন দেয় ও তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। এ নিয়ে সুলতানুল আজম খান ও রমজান আলীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল মজিদ বলেন, এ ধরনের আচরণ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হতে পারে না। দলের নেতাদের শৃঙ্খলাবোধ ও ধৈর্যশীল হতে হবে।

সভা শেষে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশে সুলতানুল আজম খান ও রমজান আলী একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।