হবিগঞ্জে অটোরিকশায় যাত্রী ওঠানো নিয়ে সংঘর্ষে তিনজন নিহত

বানিয়াচংয়ে সংঘর্ষে গুরুতর আহত পাঁচজনকে অ্যাম্বুলেন্সে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার আগুয়া গ্রামে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার আগুয়া গ্রামের অটোরিকশাচালক কাদির মিয়া (৩০), তাঁর নিকটাত্মীয় সিরাজ মিয়া (৫০) ও লিলু মিয়া (৫০)। সংঘর্ষে আরও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ৫ জনকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ১১ জনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার আগুয়া গ্রামে একটি অটোরিকশা স্ট্যান্ড আছে। সেখান থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অটোরিকশাগুলো চলাচল করে। আজ বেলা আড়াইটার দিকে অটোরিকশাচালক কাদির মিয়া গাড়িতে একজন যাত্রী ওঠালে স্ট্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক বদরুল আলম বাধা দেন। এ সময় দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। কথা–কাটাকাটির খবর আগুয়া গ্রামে পৌঁছালে দুই পক্ষের আত্মীয়স্বজনেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লম ও ইটপাটকেল নিয়ে মারামারিতে জড়ান।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে অটোরিকশাচালক কাদির মিয়া, তাঁর স্বজন সিরাজ মিয়া ও লিলু মিয়া নিহত হন। তাঁরা সবাই এক পক্ষের লোক। এ ঘটনায় গুরুতর আহত নাঈম মিয়া (৩০), দিলু মিয়াসহ (৪০) পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহত মারুফ মিয়া (৩০), সুফিক মিয়াসহ (৬০) ১১ জনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আগুয়া গ্রামের বাসিন্দা মাহতাব মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও আগুয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বদরুল আলমের (সিএনজি স্ট্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক) আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। আজ দুপুরে সোহেলের চাচাতো ভাই অটোরিকশাচালক কাদির মিয়ার সঙ্গে যাত্রী ওঠানো নিয়ে বদরুলের কথা–কাটাকাটি হয়। গ্রামে ওই খবর পৌঁছালে দুই পক্ষের পুরোনো বিরোধ চাঙা হয় এবং দেশি অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহেল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিহত তিনজনের মধ্যে কাদির ও সিরাজ তাঁর চাচাতো ভাই। মারা যাওয়া লিলু মিয়া সম্পর্কে তাঁর মামা হন। এ ব্যাপারে জানতে সিএনজি স্ট্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক বদরুল আলমের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানো নিয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন অটোরিকশাচালক। অপর দুজন কৃষিকাজ করেন। তাঁদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।