ছিনতাই হওয়া ফোনের সূত্র ধরে ইজিবাইকচালক হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

বগুড়ার শাজাহানপুরে ইজিবাইকচালক মোফাজ্জল হোসেন হত্যা মামলার বিস্তারিত নিয়ে পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। শনিবার শাজাহানপুর থানা চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ইজিবাইকচালক মোফাজ্জল হোসেনকে (৫২) গলা কেটে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে আজ শনিবার বগুড়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে জানানো হয়, ইজিবাইকচালকের ছিনতাই হওয়া মুঠোফোনের সূত্র ধরে হত্যায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুই আসামি হলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার জয়শিং পশ্চিমপাড়ার সজীব ওরফে ছোট সজীব (১৯) ও সজীব ওরফে বড় সজীব (২১)। শাজাহানপুর থানা–পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই করা ইজিবাইক এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো বার্মিজ চাকু।

ইজিবাইকচালক মোফাজ্জল হোসেন শাজাহানপুর উপজেলার খলিশাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। ৪ নভেম্বর রাতে তাঁকে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাই করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পর দিন ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে বগুড়া শহরের সরকারি শাহ সুলতান কলেজ–সংলগ্ন রেশমবাগান থেকে মোফাজ্জলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মাবিয়া সুলতানা (৩৬) শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

ব্রিফিংয়ে বগুড়ার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বছর দুই আগে মোফাজ্জল ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক কিনে বগুড়া শহরে যাত্রী পরিবহন করতেন। প্রতিদিনের মতো ৪ নভেম্বর বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বগুড়া শহরের মফিজ পাগলার মোড় এলাকায় মোফাজ্জলের সঙ্গে প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফার দেখা হয়। এরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্ত্রী মাবিয়া সুলতানা ফোন দিয়ে বন্ধ পান। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ৫ নভেম্বর সকালে সরকারি শাহ সুলতান কলেজ–সংলগ্ন রেশমবাগানের পাশে মোফাজ্জলের গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পুলিশ জানায়, ৪ নভেম্বর রাতে বগুড়া শহরের কলোনী এলাকায় চুন্নুর চাপের দোকান থেকে দুজন যাত্রী মোফাজ্জলের ইজিবাইকে চড়েন। প্রথমে মালতিনগর এবং পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। এরপর বনানীতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে সুলতানগঞ্জ হাইস্কুল–সংলগ্ন রাস্তায় নিয়ে পেছন থেকে গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরে মোফাজ্জলকে গলা কেটে হত্যা করে ইজিবাইক ও মুঠোফোন ছিনতাই করে নিয়ে যান ওই দুজন। হত্যাকারীরা পরে ধুনটের সোনাহাটা বাজারের একটি গ্যারেজে ইজিবাইক বিক্রি করে দেন। ৬০০ টাকায় মুঠোফোন বিক্রি করা হয় উত্তর নন্দিয়ার পাড়ার সোহেল রানা নামের এক ব্যক্তির কাছে। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে মুঠোফোন ক্রেতা সোহেল রানাকে আটক করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।