সংসদ সদস্য আয়েনের বিচার দাবিতে আ.লীগ নেতার কর্মসূচি অব্যাহত

রাজশাহী–৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিচার দাবিতে চার দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সরকার। শনিবার বিকেলে রাজশাহী প্রেস ক্লাবের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিচার দাবিতে সুরঞ্জিত সরকারের অবস্থান কর্মসূচি আজ শনিবার চতুর্থ দিন গড়াল। সুরঞ্জিত সরকার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মোহনপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মোহনপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।

আজ সকাল ১০টার দিকে সুরঞ্জিত সরকার রাজশাহী প্রেসক্লাবের সামনে এসে আগের মতোই গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বসে পড়েন। রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করার কথা জানান তিনি। গত বুধবার দুপুর ১২টায় তিনি রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ও পরে রাজশাহী প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। সন্ধ্যায় ছয়টা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে রাস্তার উত্তর পাশে অবস্থান নেন সুরঞ্জিত সরকার। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন। শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত একইভাবে অবস্থান করেন।

সুরঞ্জিত সরকার জানান, আজ সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের ভগ্নিপতি ও মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। তিনি তাঁকে বুঝিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে তাঁর গাড়িতে ওঠার জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আবার কর্মসূচিতে বসে যান। তিনি বলেন, আবদুস সালাম সেখানে আসার আগে তাঁর অনুসারী দুই যুবক এসে কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য তাঁকে হুমকি দেন। তখন তিনি উচ্চস্বরে কথা বলা শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ওই দুজন স্থান ত্যাগ করেন। কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালামের গাড়িচালক এসে তাঁকে বিনয়ের সঙ্গে কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বলেন। বলেন কর্মসূচি প্রত্যাহার না করলে তাঁর ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

ওই সময় সুরঞ্জিত তাঁকে বলেছেন, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী ছিলেন। সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন ও তাঁর ভগ্নিপতি আবদুস সালাম বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে তাঁকে পরাজিত করেন। তাঁদের ক্যাডার দিয়ে মারধরের কারণে তিনি আজ পঙ্গু হয়ে গেছেন। কেউ তাঁর আগের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। তিনি কিছু চান না। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। যাতে আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী এই নেতাদের বিচার হয়। সুরঞ্জিত জানান, রোববার প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে নিজের লোকজন নিয়ে যোগ দেবেন। এর পরের দিন থেকে বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁর কর্মচসূচি চলবে।

সুরঞ্জিত সরকার আরও বলেন, ‘চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে আমি একেবারে শেষ হয়ে গেছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আয়েন উদ্দিন ও তাঁর ভগ্নিপতির বিচার চাই। তাই রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ রাতে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, সুরঞ্জিত সরকার ভাঁওতাবাজি করছেন। তাঁর সম্পর্কে অনুসন্ধান করে সাংবাদিকদের প্রতিবেদন করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

সুরঞ্জিতকে লোকজন দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, ‘সুরঞ্জিত যা বলছে, তার সব মিথ্যে। ও (সুরঞ্জিত) যেসব খারাপ কাজ করেছে, এগুলো আমরা বড় হিসেবে বলতে পারি না।’