ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১২

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় অন্তত ১২ জন আহত হন। আজ শনিবার উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের খাপুরা গ্রামেছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩টি বাড়ি ভাঙচুর ও অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে সোয়া ৯টা পর্যন্ত উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের খাপুরা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাপুরা গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষ সক্রিয় রয়েছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাধু মাতুব্বর (৫৩) ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিরাজ সিকদার (৪০)। কয়েক দিন আগে সাধু মাতুব্বরের সমর্থক আরজু ফকিরের ছেলে আজিম ফকিরের (১৯) সঙ্গে মিরাজ সিকদারের সমর্থক রিপন সিকদারের দোকানের কর্মচারীর কথা–কাটাকাটি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ বাজারে আজিম ফকিরকে পিটিয়ে আহত করেন মিরাজ সিকদারের পক্ষের লোকজন। গুরুতর আহত আজিমকে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

আজ সকাল সাতটার দিকে দুই পক্ষের লোকজন মুনসুরাবাদ বাজারে তর্কাতর্কিতে জড়ান। পরে দুই পক্ষের কয়েক শত লোক দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সড়কি, রামদা ও ইটের টুকরা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় মিরাজ সিকদারের দলের চুন্নু সিকদার, নুরু শেখ ও ফরহাদ শেখের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় ফরহাদ শেখের একটি মাইক্রোবাসও ভাঙচুর হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, আহত দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন ভর্তি রয়েছেন। তিনজন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের শরীরে কোপ, ইটপাটকেলের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

গুরুতর আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাধু মাতুব্বরের সমর্থক রোমান মিয়া, মিরাজ সিকদারের দলের শিপন সিকদার। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মিরাজ সিকদারের দলের বিপ্লব ফকির (৩০) ও নুর ইসলাম (৪৫)। কিছু আহত ব্যক্তি স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসা নিয়েছে।

ঘটনা সম্পর্কে সাধু মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা গন্ডগোল করতে চাই না। কিন্তু কয়েক দিন আগে আমার সমর্থক আজিম ফকিরকে প্রতিপক্ষ অন্যায়ভাবে মারপিট করেছে। সে এখন ফরিদপুর মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এ কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।’

মিরাজ সিকদার বলেন, ‘সাধু মাতুব্বরের সমর্থকেরা আজ সকালে অতর্কিতে আমাদের দুই সমর্থকের বাড়ি ও এক সমর্থকের মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেন। এ সময় আমাদের প্রতিরোধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় ছিল না।’

হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আসাদুজ্জামান বলেন, খাপুরা গ্রামের সাধু মাতুব্বর ও মিরাজ সিকদারের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রথমে একজনকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এরপর সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।