সহকারী প্রক্টরের স্ত্রীকে নিয়োগের সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় বাতিল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়ার স্ত্রী অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ বোর্ডের করা সুপারিশ বাতিল করেছে সিন্ডিকেট। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৪তম সিন্ডিকেটে নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করা হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে রাত নয়টায় একজন সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।

গত বছর ২৫ জানুয়ারি ও  ২৪ আগস্ট পালি বিভাগে প্রভাষক পদে আলাদা দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। দুটিতেই সহকারী প্রক্টরের স্ত্রী অভি বড়ুয়া আবেদন করেছিলেন। তবে তিনি স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম না হয়েও আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছিলেন, যা সত্য নয়। এ ছাড়া বিজ্ঞাপনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব উল্লেখ করার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। এসব কারণে তাঁর আবেদন বাতিল করে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই কমিটি।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভি বড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করেন। গত বছরের ৬ নভেম্বর তিনি সংশোধনী আবেদনপত্র জমা দেন। তবে আবেদনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সে আবেদনপত্র গ্রহণ করেনি নিয়োগের যাচাই বাছাই কমিটি। কমিটির এ সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে অভি বড়ুয়াকে সাক্ষাৎকারে ডাকে কর্তৃপক্ষ। গত ১৩ মার্চ এ সাক্ষাৎকার নেয় নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড।  ওই বোর্ডে পালি বিভাগের সভাপতি শাসনান্দ বড়ুয়ার আপত্তি সত্ত্বেও অভি বড়ুয়াকে সবার আগে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। ওই সময় সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়ার বিরুদ্ধে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠে।

জানতে চাইলে পালি বিভাগের সভাপতি শাসনানন্দ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করা , সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারার কারণে তিনি অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ না দেওয়ার পক্ষে ছিলেন।

নিয়োগের এ সুপারিশ বাতিলের কারণ জানতে চাইলে সিন্ডিকেটের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনপত্রে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দেওয়া, বিজ্ঞাপনের শর্ত পূরণ না করা ও পালি বিভাগের সভাপতির আপত্তির কারণে অভি বড়ুয়ার নিয়োগের সুপারিশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে সভার কার্যবিবরণী তৈরি হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, সংবিধি এবং শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী কোন বিভাগে কতজন শিক্ষক দরকার হবে, তা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি। এরপর শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর এসব তথ্য পাঠানো হয় নিয়োগ বোর্ডে। বোর্ড প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয় এবং নিয়োগের সুপারিশ করে। পরে সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন হয়।

আইন বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল
এদিকে  পরিকল্পনা কমিটির আপত্তি থাকার পরও আইন বিভাগে দুটি স্থায়ী প্রভাষক পদে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিভাগের আপত্তি থাকায় এটি বাতিল করেছে সিন্ডিকেট।

সিন্ডিকেটের এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আইন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির আপত্তি থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাই ওই বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করা হয়েছে।