খালের পানিতে হঠাৎ দুই গুইসাপের লড়াই, উপভোগ করল উৎসুক জনতা

খালের পানিতে দুই গুইসাপের লড়াই। আজ সোমবার সকালে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার তৈরাপাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

সড়কের পাশের খালের পানিতে দুটি গুইসাপের কুস্তি চলছে। একবার একটি ওপরে তো পর মুহূর্তেই অন্যটি ওপরে চেপে বসছে। কখনো একে অপরকে জড়িয়ে ধরছে, কামড় দিচ্ছে। আবার পানির ওপরে মাথা উঁচু করে দর্শনার্থীদের চেয়ে দেখছে। দীর্ঘ লড়াইয়ে কেউ যেন হার মানতে চাইছে না।

আজ সোমবার সকালে এই দৃশ্য দেখা যায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার তৈরাপাড়া গ্রামে, যা উপভোগ করে আশপাশ থেকে ছুটে আসা নানা বয়সের শত মানুষ। তবে কাউকেই গুইসাপ দুটিকে বিরক্ত করতে দেখা যায়নি; বরং নীরবে একনজরে গুইসাপ দুটির দিকে চেয়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনার ছবি ও ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

তৈরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের সড়কের পাশের খালে হঠাৎ দুটি গুইসাপকে কুস্তি করতে দেখেন দুই পথচারী। পরে তাঁরা আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে নানা বয়সের মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। অনেকে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। ফেসবুকে ভিডিও দেখে আশপাশের অনেকে ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে।

গুইসাপের লড়াই দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়। আজ সোমবার সকালে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার তৈরাপাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

তৈরাপাড়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক মজিবুর রহমান বলেন, এর আগে গ্রামে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। গুইসাপ দুটি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নাচের তালে কুস্তি করে। পরস্পরকে জড়িয়ে পানি থেকে প্রায় এক ফুট ওপরে খাড়া হয়ে ওঠে। একই গ্রামের নাহিদা সুলতানা নামের এক ছাত্রী বলেন, ‘অন্য সময় গুইসাপ মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। কিন্তু আজ তারা না পালিয়ে শত মানুষের সামনেই নাচছিল। আমরা সবাই উপভোগ করেছি।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ও নলডাঙ্গার বাসিন্দা ফজলে রাব্বী বলেন, গুইসাপ এখন বিপন্ন প্রাণী। এরা নিরীহ প্রকৃতির। কাউকে কামড়ায় না। এর বিষও নেই। তবে খাল-বিলে নতুন পানি এলে এরা আনন্দে মেতে ওঠে। পরস্পর কুস্তিতে লিপ্ত হয়। মারামারি করে।

ফজলে রাব্বী আরও বলেন, তৈরাপাড়া গ্রামে গুইসাপের কুস্তি তিনি নিজেও দেখেছেন। গুইসাপ দুটি পুরুষ ছিল। তারা একে অপরকে পানি থেকে মাটিতে সরানোর জন্য মারামারিতে লিপ্ত হয়েছিল। দীর্ঘ সময় মানুষের সামনেই তারা ছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা পর তারা জঙ্গলে চলে যায়। স্থানীয় লোকজনও তাদের হয়রানি করেনি।