বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করলে তাদের কিছু বলার নেই

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে কথা বলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।  আজ বৃহস্পতিবার মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করলে তাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু শান্তিপূর্ণ শহরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা হলে আওয়ামী লীগ তার জাবাব দেবে। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশকে সামনে রেখে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, আজ সকালে বিএনপির সম্মেলন মাঠের পাশ দিয়ে ঘুরে এসেছেন। দেখেছেন তাঁদের নেতা-কর্মীরা সব মাঠের মধ্যে চাদর পেতে শুয়ে আছেন। আর মাঠে রান্নাবান্না চলছে। একটা পিকনিক পিকনিকভাব। সরকারের উদারতার সুযোগে সমাবেশের অনুমতি নিয়ে তাঁরা এখানে এসে উৎসব করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে যেসব কথাবার্তা বলছেন, তা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাঁরা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য যা যা বলা দরকার, তাই বলছেন। ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে অন্যভাবে পাঠানোর কথা বলছেন। এটা তো রীতিমতো অপরাধ।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে দেশে কোনো সরকার নেই। তাঁরা বক্তব্য দিয়ে বলছেন, রাজশাহীতে সেমিফাইনাল খেলা এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ফাইনাল খেলা হবে। অথচ ঢাকায় তাঁরা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাচ্ছেন না। এর পেছনে কারণ হচ্ছে, ওই মাঠেই তো বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানেই শত্রুবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। তাঁরা মুখে যতই স্বাধীনতার কথা বলুন, আসলে তাঁরা মননে-মগজে পাকিস্তানপন্থী। জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে তাঁরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ ছাড়া মাঠ ভরার মতো লোক তাঁরা আনতে পারবে কি না, এ নিয়েও বিএনপির সংশয় রয়েছে।

বিএনপি ইতিপূর্বে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করেছিল। সেই সমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন। ওই হুমকির প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে, যা বর্তমানে চলমান। এবারও গত ২৯ নভেম্বর নগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক কর্মিসভায় মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে যে কাল্পনিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য উপস্থাপন করেছেন, তার মাধ্যমে মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে তাঁরা আবারও রাজশাহীতে জঙ্গিবাদ কায়েম করতে চান।

বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকারের ২০০১-২০০৬ সালের শাসনকে দুঃশাসন ও তাদের আমলে আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যা ও ২১ আগস্টেও গ্রেনেড হামলার উদাহরণ টেনে এই নেতা বলেন, বিএনপি সেই ধারাবাহিকতায় সমাবেশের নামে আবারও নাশকতা ঘটাতে পারে। রাজশাহী শান্তির শহর। এই শহরে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করুক। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও বলে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা অবস্থান নেবেন। কোনোরকম অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে আওয়ামী লীগ তার জবাব দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য আখতার জাহান, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, রেজাউল ইসলাম, চিকিৎসক তবিবুর রহমান শেখ, বদরুজ্জামান খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহ্সানুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহমেদ, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ কবির, যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ফ ম আ জাহিদ, উপদপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপপ্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য নজরুল ইসলাম, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান, সৈয়দ মন্তাজ আহমেদ, মজিবুর রহমান, আলিমুল হাসান, মাসুদ আহমদ, আশীষ তরু দে সরকার, মহানগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার প্রমুখ।