সরকারিভাবে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তারপরও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরত্বের এই পথে যাত্রীপ্রতি ন্যূনতম ভাড়া ৩৩ টাকা। সঙ্গে পন্টুনের ভাড়া ৫ টাকা যোগ করে মোট ভাড়া হওয়ার কথা ৩৭ টাকা। কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ৪৫ টাকা।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে লঞ্চের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ৭০ পয়সা বাড়িয়েছে সরকার। প্রথম ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য প্রতি কিলোমিটারে জনপ্রতি ২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে লঞ্চের ভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ২৫ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ওই দিন থেকেই লঞ্চের নতুন ভাড়া কার্যকর হয়। তবে দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে এক সপ্তাহ আগে থেকেই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের কথা বলে ৫ আগস্ট সরকার সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়। এতে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। কেরোসিনের দামও লিটারে ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। এরপর বাস, লঞ্চ, ফেরিসহ সব গণপরিবহনে ভাড়া বেড়েছে।

পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ কমেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট ঘুরে দেখা যায়, যানবাহন ও যাত্রীসংখ্যা অনেক কম। দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা পরিবহনের সঙ্গে পণ্যবাহী যানবাহন সরাসরি ফেরিতে উঠছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুস শেখ বলেন, ‘আমি প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও লঞ্চে নদী পাড়ি দিই। সিরাজগঞ্জ থেকে রাজবাড়ী হয়ে নবীনগর যাচ্ছি। আগে পন্টুন চার্জসহ ভাড়া দিয়েছি ৩৫ টাকা। সেখানে বর্তমানে আদায় করা হচ্ছে ৪৫ টাকা। আমাদের আর ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলার উপায় নাই।’

এ সম্পর্কে আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলে আমাদের অনেক লোকসানে পড়তে হয়। পরে মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে তেলের মূল্য বাড়ানোর পরদিন থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করা হয়। সরকারিভাবে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা এলেও নির্দেশনাপত্র পাইনি।

বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরের দিন থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট রুটে ভাড়া বেশি করে আদায় শুরু করে। তবে তাঁদের নিষেধ করা হয়েছিল।