টেকনাফে ফিরেছেন সেন্ট মার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকেরা
লঘুচাপের প্রভাবে সতর্কসংকেত জারি থাকায় প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন তিন শতাধিক পর্যটক। আজ সোমবার বিকেলে এমভি বার আউলিয়া নামে একটি জাহাজে করে তাঁরা নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছেন। তবে সাগর উত্তাল থাকার কারণে সোমবারও টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত শনিবার ও গতকাল রোববার বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজসহ নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে আজ সকালে পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করার পর জাহাজ চলাচল শুরু হলেও সাগর উত্তাল থাকায় যাত্রীবাহী সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে এমভি বার আউলিয়া নামে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। জাহাজে নতুন সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক ও দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন দেড় শতাধিক। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের জেটিতে নোঙর করে। আবার বেলা আড়াইটার দিকে আটকে পড়া তিন শতাধিক পর্যটকসহ আজ নতুন করে বেড়াতে যাওয়া আরও দুই শতাধিক পর্যটক নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছায়। তবে দেড় শতাধিক পর্যটক রাত যাপন করার জন্য সেন্ট মার্টিনে রয়ে গেছেন।
বিকেলে দমদমিয়া জাহাজঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বিকেলের দিকে জাহাজটি যখন ঘাটে এসে পৌঁছায়, তখন মুষলধারে বৃষ্টি নামে। ঘাটে কোনো ধরনের শেডের ব্যবস্থা না থাকায় সবাই ভিজে যান।
বগুড়ার আদমদীঘি এলাকার ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকালে পরিবারের ১১ সদস্য নিয়ে সেন্ট মার্টিনে ঘুরতে গিয়ে আটকা পড়েন। তেমন কোনো সমস্যা না হলেও কিছুটা ভয় তো ছিলই। এখন বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থেকে আসা এক চিকিৎসক বলেন, ‘জাহাজ থেকে নামার সময় মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় সাত মাসের শিশু পর্যন্ত ভিজে গেছে। শুধু আমরা কেন, জাহাজে করে আসা আট শতাধিক পর্যটক বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।’
টেকনাফ ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান বলেন, আটকে পড়া পর্যটকেরা টেকনাফে পৌঁছার পর নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
টেকনাফ সেন্ট মার্টিন নৌপথে চলাচলকারী সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করা হলেও সাগর উত্তাল থাকায় কোনো সার্ভিস ট্রলার সেন্ট মার্টিন থেকে ছেড়ে আসেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, আবহাওয়ার সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করার পর আজ আবার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। আটকা পড়া পর্যটকেরা নিরাপদে ফিরেছেন।