মসজিদের সিঁড়িতে ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ: আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত ঘর থেকে পিস্তল-রেইনকোট উদ্ধার

নাটোরের সিংড়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হওয়া পিস্তল ও রেইনকোটছবি: প্রথম আলো

নাটোরের সিংড়ার চৌগ্রাম এলাকায় মসজিদের সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় ব্যবসায়ী ওসমান গনি (৬২) গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় একটি পিস্তল ও রেইনকোট উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে এগুলো উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী।

এদিকে অস্ত্রোপচার শেষে গুলিবিদ্ধ ওই ব্যবসায়ী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ রোববার সকালে স্বজনেরা চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন।

এ বিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক বলেন, গুলি করার ঘটনায় উদ্ধার হওয়া পিস্তল ও রেইনকোট ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। এগুলো পরীক্ষা করা হবে। আহত ব্যবসায়ীর চিকিৎসা নিয়ে স্বজনেরা ব্যস্ত আছেন। তাঁরা থানায় এলে মামলা হবে। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিংড়া থানা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা গুলি করার ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের অদূরে একটি আমবাগানের পাহারা ঘর থেকে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, রেইনকোট ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করেন। আমবাগানের ঘরটি গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী ওসমান গনির মালিকানাধীন। তবে ওই ঘরে কেউ বসবাস করেন না। ঘরের জানালা খোলা ছিল। ঘরটি মূলত আমবাগান পাহারা দেওয়ার কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। কৃষিশ্রমিকেরাও কখনো কখনো ঘরটি ব্যবহার করেন। ঘরটি নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে।

পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা, পিস্তলটি ওই ব্যবসায়ীকে গুলি করার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। হামলাকারী ঘটনার পর এগুলো জানালা দিয়ে ওই ঘরে ফেলে রেখে যেতে পারে।

গতকাল মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে গেলে ব্যবসায়ী ওসমান গনিকে গুলি করে পালিয়ে যায় এক দুর্বৃত্ত। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার ১০ নম্বর চৌগ্রাম ইউনিয়নের চৌগ্রাম পারুহারপাড়া মসজিদে। তিনি পারুহারপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল প্রামানিকের ছেলে। সিংড়ার চৌগ্রাম বাজারে তাঁর ধান-চালের ব্যবসা রয়েছে।

ওসমান গনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ সকালে তাঁর ভাতিজা দুলাল হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল চাচাকে প্রথমে সিংড়া উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, ওসমান গনিকে গতকাল সকালে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তাঁর কোমরের পেছনে একটি গুলির ক্ষত ছিল। তাৎক্ষণিক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

দুলাল হোসেন বলেন, ‘আমার চাচা (ওসমান গণি) সাদাসিধে মানুষ। তাঁর সাথে কারও সমস্যা আছে, এমনটা আমার জানা নাই। কে, কেন তাঁকে গুলি করল, তা বুঝে উঠতে পারছি না। ঘটনার পরপরই চাচা মুসল্লিদের জানিয়েছেন, রেইনকোট পরিহিত এক লোক পেছন থেকে গুলি করে পালিয়েছে।’