শাবি উপাচার্যকে আলটিমেটাম, ‘ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা বিবেচনা করবেন’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরসহ কয়েকটি দপ্তরের প্রশাসকদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে তাঁদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবির অন্যতম সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক, প্রাধ্যক্ষ বডি, শিক্ষক সমিতিসহ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সব শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার ও শিক্ষার্থীদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা এবং নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায়, তাঁদের ক্যাম্পাস থেকে চিরজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন। যাঁরা দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করবেন, তাঁদের ক্যাম্পাসে থাকার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিবেচনা করবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যহীন নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাবিপ্রবির সমন্বয়ক টিম খুব শিগগিরই একটি প্রস্তাব তুলে ধরবে। প্রস্তাব তুলে ধরার আগপর্যন্ত শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে অবাধে চলাফেরা ও অবস্থান করতে পারবেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। উপাচার্য এক সপ্তাহ আগে থেকেই রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা। এ ছাড়া প্রক্টরিয়াল বডি থেকে শুরু করে প্রাধ্যক্ষরা কেউ দপ্তরে আসছেন না। রোববার থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালু থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে আসতে দেখা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. সাজেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাস এখন পুরোটাই অনিরাপদ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এমন অবস্থায় বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনের কাউকেই দেখা যাচ্ছে না ক্যাম্পাসে। এমন অবস্থা চলতে পারে না।
সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সহ-উপাচার্য মো. কবির হোসেন, প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীকে মুঠোফোনে কয়েক দফায় একাধিকবার কল দিলেও তাঁদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।