নামাজ পড়তে উঠে দেখলেন, একই দড়িতে ঝুলছে পুত্রবধূ ও নাতির লাশ

ঝুলন্ত মরদেহ
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা ও তাঁর শিশুপুত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নদীয়াবাদ গ্রাম থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

যাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন গৃহবধূর রাবেয়া বেগম (২৬) ও তাঁর একমাত্র ছেলে আবদুল্লাহ (৩)। রাবেয়া বেগম নদীয়াবাদ গ্রামের প্রবাসী আবদুল মতিনের স্ত্রী এবং উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূর স্বামী প্রবাসী, তাঁদের দাম্পত্য জীবনে কোনো কলহ ছিল না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসী আবদুল মতিন পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে রাবেয়া বেগমকে বিয়ে করেন। তাঁদের সাংসারিক জীবনে তিন বছর বয়সী আবদুল্লাহ একমাত্র সন্তান। প্রবাস থেকে আবদুল মতিন ছুটিতে বাড়িতে এসে গত এক বছর আগে আবারও প্রবাসে চলে যান।

আজ সকালে নামাজ পড়তে উঠে রাবেয়া বেগমের শ্বশুর আলী আকবর একই রশিতে পুত্রবধূ ও নাতির লাশ ঝুলতে দেখেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুজনের লাশ উদ্ধার করেন ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাবেয়া বেগমের পারিবারিক কলহ বা অন্যান্য কোনো ঘটনা চোখে পড়েনি তাঁদের। তবে কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেটা কেউই বুঝতে পারছেন না। রাবেয়া বেগমের শ্বশুর-শাশুড়ি দুজনই বৃদ্ধ। তাঁদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না।

মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, লাশ দুটিতে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। তাঁরা ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন, নাকি অন্য কিছু—সেটা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই গৃহবধূর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছেন তাঁর প্রবাসী স্বামী। তাঁর সঙ্গে কোনো পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা কলহ ছিল না বলে তিনি দাবি করেছেন। তাহলে এমন ঘটনা কেন ঘটতে পারে, সেটিও তদন্ত করে দেখছি আমরা।’