হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরিবারের সদস্যরা গভীর ঘুমে, একই গ্রামের তিন বাড়িতে চুরি
দুপুরের পর দুই পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর গতকাল রোববার দুপুরে একটি বাড়িতে এবং রাতে দুটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শিরিশগুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিরিশগুড়ি গ্রামের রাইসুল ইসলাম, তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে আলী আকবরের বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী মো. ফরহাদের বাড়িতে চুরি হয়েছে। তিন বাড়ির মধ্যে দুই বাড়ির সদস্যরা ঘটনার আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
আলী আকবর প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল তাঁর মা মোসা. সুফিয়া ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মোসা. দোলন বাড়িতে ছিলেন। চোরেরা বাড়ির দুটি ঘর থেকে এক ভরি স্বর্ণালংকার ও সন্তানদের জমানো ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা দেখেন, পাশের দুটি ঘরের দরজার তালা খোলা। এরপর ভেতরে গিয়ে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পান। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর মা ও ভাবি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। রাতে তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল অনুভব করায় একটানা ঘুমিয়েছেন। তাঁদের ধারণা, দিনের বেলা কেউ খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়েছিলেন।
মো. ফরহাদ জানান, তিনি গরুর ব্যবসা করেন। গতকাল সকালে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরে গরু না কিনে টাকাসহ বাড়িতে এসে দেখেন, তাঁর পরিবারের চার সদস্য বিছানায় দুর্বল হয়ে পড়ে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর ফরহাদ নিজেও ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙলে জানতে পারেন, তিনি বাড়ি ফিরে আসার আগে বিছানার নিচ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, কেউ হয়তো খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অথবা অন্য কোনোভাবে সবাইকে অসুস্থ করে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
রাইসুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাড়ির একটি ঘরে কেউ ছিল না। ওই ঘরটি রাতে তালা দিয়ে রাখা হয়। আজ সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন, সেটি বাইরে থেকে আটকানো। এরপর পাশের বাড়ির চাচিকে ফোন করে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার পর দেখা যায়, তাঁদের ঘরের বিপরীত দিকের অপর ঘরটির দরজা খোলা। সেখানে জিনিসপত্র ছড়ানো–ছিটানো। মূল্যবান জিনিস চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা।
উল্লেখ্য, পাঁচ মাস আগে ওই গ্রামের পাশের গ্রাম সিমলাপাড়ায় জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তখন জামাল উদ্দিনসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসাও দিতে হয়েছে। ওই রাতে তাঁদের বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।