ছাত্রলীগ কর্মীকে ‘মারধরের’ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ, মামলা নেয়নি পুলিশ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ফারদিন কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। ফারদিন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিজ সংগঠনের নেতা–কর্মীদের নাম উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রক্টরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ফারদিন থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুমতি পাওয়া না গেলে মামলা নেওয়া সম্ভব না।

ফারদিন কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসানের সমর্থক। ফারদিন কবির লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গত সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খালের মাঠে ফারদিনের এক বন্ধু ও তাঁর বান্ধবীকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা উত্যক্ত করে মারধর করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই রাতে তাঁকে সৈয়দ মুজতবা আলী হল থেকে শাহপরাণ হলে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সজীবুর রহমান ও মো. সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশে মারধর করেছেন। ওই অভিযোগে তিনি আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন

অভিযুক্ত সাজ্জাদ বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই। তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক সজীবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ। অভিযোগের বিষয়ে সজীবুর গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে জুনিয়রদের মধ্যে ছোট বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। পরে রাতেই আমরা সিনিয়রেরা বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।’

ফারদিন কবির প্রথম আলোকে বলেন, উত্ত্যক্তের শিকার ওই ছাত্রী এখনো ‘ট্রমার’ মধ্যে আছে। বন্ধুরা সবাই মিলে ওই ছাত্রীকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। এর আগে সোমবার রাতে হামলার ঘটনায় আহত হয়ে তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে গতকাল তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে থানায় হাজির হলেও পুলিশ বলেছেন, মামলা করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি লাগবে।

সিলেটের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান প্রথম আলোকে বলেন, এক শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন, এটা ঠিক। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া মামলার এজাহার গ্রহণ করা সম্ভব না। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যোগাযোগ করা হয়নি। তবে তিনি নিজেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এর বাইরে তিনি কথা বলতে চাননি। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল বলেন, গতকাল মঙ্গলবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ওই ছাত্রের লিখিত অভিযোগটি তিনি হাতে পানিনি। তবে শুনেছেন একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার তিনি বিষয়টি দেখবেন।