নরসিংদীর রায়পুরায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক সদস্যকে প্রতিপক্ষ গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মেঘনার শাখা নদীর বড়ঘাট এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তির নাম মো. স্বপন আহমেদ (৪২)। তিনি বাঁশগাড়ি ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি একই ইউনিয়নের বটতলীকান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বপন আহমেদ বাঁশগাড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সমর্থক ছিলেন। গত ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আবেদ আলী নামের এক ব্যক্তির কাছে হেরে যান। ওই নির্বাচনের দিন স্বপনের ভাই দুলাল মিয়া প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। এর পর থেকেই আবেদ আলীর সঙ্গে স্বপন আহমেদের দ্বন্দ্ব চলছিল।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর স্বপন আহমেদের মুঠোফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। ওই প্রান্তের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে যান। রাতে তিনি বাড়িতে না ফেরায় রাতভর তাঁকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁরা জানতে পারেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই পাঁচজন মুখোশধারী ব্যক্তি তাকে হাত-পা বেঁধে নদীর পাড়ে নিয়ে যান। আজ সকালে বড়ঘাট এলাকায় নদীর পাড় ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় কচুরিপানার পাশে তাঁর লাশ দেখেন।
খবর পেয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বপন আহমেদের লাশ শনাক্ত করেন। পরে সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে রায়পুরা থানার পুলিশ। ওই থানার উপপরিদর্শক আবুল কালাম সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
স্বপন আহমেদের স্ত্রী বলেন, ‘গতকাল রাতে আবেদ আলীর লোকজনই ফোন করে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে। হত্যার পর তার লাশ নদীর কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখে তারা। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্যই আমার স্বামীকে খুন করেছে আবেদ আলীর লোকজন।’
স্বপন আহমেদকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগের বিষয়ে বাঁশগাড়ি ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবেদ আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাঁশগাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির বলেন, গতকাল রাতে কে বা কারা স্বপন আহমেদকে গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে রেখেছে। কারা তাঁকে এভাবে হত্যা করেছে, তা পুলিশই তদন্ত করে খুঁজে বের করবে।
জানতে চাইলে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আমরা খবর পাই, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন আহমেদের লাশ নদীর পাড়ে পড়ে আছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। কে বা কারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে, তা নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে।’