সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, ভাশুর-জা মিলে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা

লাশ
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের রহমতের পাড়া এলাকায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রোকসানা আক্তার (২২) হত্যা মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি ও এক সাক্ষী। গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার দুই আসামিসহ তিনজন চট্টগ্রামের পৃথক তিনটি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হকের আদালতে নিহত রোকসানার ভাশুর গোলাম মোস্তফা, তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালতে এবং ফারদিন মুস্তাকিম তাসিনের আদালতে মামলার একমাত্র সাক্ষী হোসনে আরা জবানবন্দি দেন।

নিহত রোকসানা সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতের পাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন কিবরিয়ার স্ত্রী। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা রোকসানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোকসানার স্বামী আনোয়ার হোসেন, ভাশুর গোলাম মোস্তফা ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তারকে আটক করে পুলিশ। পরে নিহত রোকসানার বাবা নুর আলম বাদী হয়ে গোলাম মোস্তফা ও স্বপ্নাকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

ওসি তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দুই আসামি বলেছেন, সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোকসানার সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন আগে বাড়ির উঠানে পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা তৈরি করেন গোলাম মোস্তফা। তবে রোকসানা নালাটি বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ওই দিনই ক্ষিপ্ত হয়ে রোকসানা ও তাঁর স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গোলাম মোস্তফা ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, একে একে রোকসানা ও তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হবে।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আসামিরা বলেছেন, হত্যাকণ্ডের দিন আনোয়ার হোসেন বাড়ি থেকে কাজে চলে যান। ওই সময় রোকসানা বাড়িতে একা ছিলেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁরা স্থানীয় একটি দোকান থেকে কেরোসিন ও হাতের গ্লাভস কিনে আনেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোলাম মোস্তফা ওই গ্লাভস পরে হাতে একটি কাঠের গুড়ি নিয়ে এবং স্বপ্না কেরোসিন নিয়ে রোকসানার ঘরে ঢোকেন। একপর্যায়ে রোকসানার মাথায় আঘাত করেন গোলাম মোস্তফা। এতে রোকসানা খাটের ওপর পড়ে যান। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য গোলাম মোস্তফা ও তাঁর স্ত্রী ওই ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। তবে ঘটনাটি দেখে ফেলেন হোসনে আরা।

ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, জবানবন্দি গ্রহণের পর গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।