পটুয়াখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় ছেলে নিহত, গুরুতর আহত বাবা হাসপাতালে
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় মো. ফাহিম বয়াতি (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। এ হামলায় গুরুতর আহত তাঁর বাবা মো. জাকির হোসেন বয়াতিকে (৪৩) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার চিংগড়িয়া বেতাগি সানকিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধলুফকির বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সানু মীর নামের এক ব্যক্তিকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। নিহত ফাহিম বয়াতির বাড়ি বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের ভাংরা গ্রামে। হামলার অভিযোগে আটক সানু মীরের বাড়িও একই গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত বাবা–ছেলেকে প্রথমে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা ফাহিম বয়াতিকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাকির হোসেন বয়াতিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীদের পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনেছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. কামাল হোসেন নামের এক যুবক। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বয়াতি ও তাঁর ছেলে মো. ফাহিম বয়াতিকে কে বা কারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেছে। এ হামলায় ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী ১০–১২ জন তরুণ অংশ নেন। এ সময় তিনি কাছে এগিয়ে গিয়ে ফাহিমকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু হামলাকারীদের তোপের মুখে তিনি পিছু হটেন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীরা চলে গেলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা ও ছেলেকে নিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে আসা আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইব্রাহীম মৃধা (২৫) বলেন, আধিপত্যের জেরে স্থানীয় সানু মীর, তাঁর ছেলে সোহাগ মীরসহ (২০) কয়েকজন তরুণ ফাহিমের ওপর আঘাত করেন। এ সময় ফাহিমের বাবা জাকির হোসেন ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তরুণেরা তাঁকেও আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। হামলাকারীরা এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবা ও ছেলেকে আঘাত করেন।
মো. ইব্রাহীম মৃধা আরও বলেন, এর আগে ফাহিমের সঙ্গে সোহাগ মীর ঝামেলায় লিপ্ত হয়েছিলেন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসা করে দিলেও হামলাকারীরা তাতে শান্ত হয়নি। এরপর ফাহিম কোরবানির ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে হামলাকারীরা কৌশল খুঁজতে থাকে। ফাহিম পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতেন বলে জানান তিনি।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহরিয়ার শুভ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। এর মধ্য তরুণ বয়সী একজন মৃত ছিলেন। অপরজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাঁর স্বজনেরা সম্ভবত তাঁকে বরিশাল নিয়ে গেছেন।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা শুনে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় হামলাকারী সানু মীর নামের একজনকে পিটুনি দিয়ে আটক করে রাখেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ সানু মীরকে উদ্ধার করে দশমিনা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত সানু মীরের ছেলে ও আত্মীয়স্বজন পলাতক। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।