নড়াইল সদর উপজেলায় আছিয়া বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে, পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের সড়াতলা গ্রামে ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুরে আছিয়ার মা রেবেকা বেগম বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
আছিয়া বেগম উপজেলার সড়াতলা গ্রামের ইকলাজ শিকদারের মেয়ে। চার বছর আগে একই গ্রামের রনি শেখের (২৫) সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে তাঁরা একটি বাড়িতে বাস করতেন। ওই বাড়িতে অন্য কেউ থাকতেন না। রনি একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নড়াইলের পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, স্বামীর পরকীয়ার কারণে দাম্পত্য কলহ ছিল। এর জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে চালিয়ে দিতে বিছানায় আগুন ধরিয়ে তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর অপরাধীরা পালিয়ে যান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, রনিকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী গ্রাম থেকে এবং রনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু আব্বাস ফকিরকে (২২) গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ধানকুড়া গ্রাম থেকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্য তিনজন রনির বাবা লিটু শেখ (৫৫) এবং তাঁর দুই ভাই ইমরান শেখ (২৮) ও রুবেল শেখকে (২৬) ঘটনার পর রাতেই বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। ওই পাঁচজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানান, আগুনের খবর পেয়ে তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে দরজা খোলা দেখতে পান। বিছানায় চিৎ হয়ে শোয়ানো ও গলা কাটা ছিল মরদেহটির। প্রায় পুরো শরীর পুড়ে হাত ও পা বেঁকে গেছে। বিছানার চাদর, জাজিম, তোশক, কাঁথা ও আছিয়ার গায়ের কাপড় পুড়ে গেছে।
পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন জানান, ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন ও দায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। অন্য তিনজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।