কক্সবাজারে পাহাড়ধসে মা–মেয়েসহ চারজনের মৃত্যু

ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসে আজ দুজন মারা গেছেন। সোমবার বিকেলে
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়া ও চকরিয়া উপজেলায় পাহাড়ধসে মা-মেয়েসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেলে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবির (ক্যাম্প-৯) এবং চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে মৃত ব্যক্তিরা হলেন এ/৬ ব্লকের রোহিঙ্গা আনোয়ার ইসলামের স্ত্রী জান্নাত আরা (২৮) ও তাঁর মেয়ে মাহিম আক্তার (২)। আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেন

আমির হামজা বলেন, কয়েক দিন ধরে উখিয়ায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে ধসে পড়ছে। রোহিঙ্গা বসতিগুলো পাহাড়ে ঢালু ও নিচু জমিতে তৈরি করা হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৯) এ/৬ ব্লকে পাহাড়ধসে রোহিঙ্গা আনোয়ার ইসলামের শেডে (ঘর) পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সহায়তায় মাটি সরিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এ সময় মাটির নিচ থেকে আনোয়ারের স্ত্রী জান্নাত আরা ও তাঁর শিশুকন্যা মাহিমকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়।

আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা জালাল আহমদ বলেন, টানা ভারী বৃষ্টিতে উখিয়ার ২৩টি আশ্রয়শিবিরে অন্তত ১২টি পাহাড়ে বড় বড় ফাটল ধরেছে। অধিকাংশ আশ্রয়শিবির পাহাড়ের ঢালুতে। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে মাটি সরে গিয়ে বহু ঘর হেলে পড়ছে। এতে শত শত রোহিঙ্গা পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, পাহাড়ধসে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকায় পাহাড়ধসে বসতঘরে ঘুমিয়ে থাকা দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুরা হলো সবুজপাড়া এলাকার নাজিম উদ্দিনের সন্তান মোছাম্মৎ তাবাচ্ছুম (১) ও মোহাম্মদ সাবিদ (৫)।

হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, নাজিম উদ্দিনের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে মাটির ঘর তৈরি করে সেখানে বসবাস করছিলেন নাজিম। আজ বিকেলে বাড়িতে তাঁর দুই শিশু ঘুমাচ্ছিল। নাজিম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী বাড়ির উঠানে কাজ করছিলেন। এ সময় পাহাড় ধসে পড়লে ওই দুই শিশু মাটির নিচে চাপা পড়ে। স্থানীয় লোকজন মাটি সরিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, শিশু দুটির লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।