বিএনএম প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

কক্সবাজার-২ আসনে বিএনএম প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা। গতকাল বিকেলে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহর বিরুদ্ধে মুঠোফোনে হুমকির অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে আওয়ামী লীগ নেতারা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গত বুধবার রাতে ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে তাঁকে ফোন করেন মহেশখালী উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা। এরপর ফোনে কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল হক।

তাঁরা দুজনই বিএনএম প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহর পক্ষে কাজ করেন। এরপর ফোন দেন মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহ। তিনজনই ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করার পাশাপাশি এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর কাছে এ ধরনের ভাষা আশা করেননি বলে জানান মো. জসিম উদ্দিন। নৌকার গণজোয়ার ঠেকাতে মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহ আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকি দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্মেলনে শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওচমান সরওয়ার বলেন, বুধবার রাতে তাঁকেও ফোন করে তাঁর মাকে ধরে গালাগালিসহ হুমকি দেন মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহ। গতকাল এসব কথাবার্তার অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল করিম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম ছমি উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আবু হায়দার, কুতুবজোম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম প্রমুখ।

তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন বিএনএম প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহ। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ তুলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুরো এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে আছেন তিনি। তাঁর গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের নেতারা পাগল হয়ে গেছেন। নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হয়রানিসহ প্রচারণায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তসহ নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীকি মারমা বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাই এ ব্যাপারে বিএনএম প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।

মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-২ আসন। এ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আশেক উল্লাহ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ইউনুস, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. খাইরুল আমিন ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ থেকে মো. জিয়াউর রহমান।