যশোর প্রতিবন্ধী সেবাকেন্দ্রে আবারও হানা, যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতাসহ চারজন আটক

যশোর পৌর যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মেহবুব রহমান ওরফে ম্যানসেল
ছবি: সংগৃহীত

যশোর সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে দ্বিতীয় দফায় কর্মকর্তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা মেহবুব রহমান ওরফে ম্যানসেলকে আটক করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে তাঁর সহযোগী আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে যশোর সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে আবারও হানা দেওয়ার ঘটনায় তাঁদের আটক করা হয়েছে।

আটক মেহবুব পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদকসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। তিনি যশোরে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধির প্রশ্রয়ে থাকেন।

আরও পড়ুন

এর আগে গত বছরের ৫ মার্চ সরকারি ওই প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণকে লাঞ্ছিত ও কর্মচারীদের মারপিট করেন মেহবুব ও তাঁর সহযোগীরা। ওই ঘটনায় মুনা আফরিণ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় মেহবুবকে আটক করে পুলিশ। কয়েক মাস কারাগারে ছিলেন তিনি। এই মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করেছে।

গত বছরের ৫ মার্চ সরকারি জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণকে লাঞ্ছিত ও কর্মচারীদের মারপিট করেন মেহবুব ও তাঁর সহযোগীরা

মেহবুব রহমান যশোর পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। গত বছর ওই হামলার পর দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। আজ বিকেলে আবারও ওই অফিসে হানা দেন মেহবুব। সেই মামলা প্রত্যাহারের কাগজপত্রে জোর করে স্বাক্ষর করাতে যান তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন মেহবুব। একাধিক দিন মেহবুব তাঁর সহযোগীদের সরকারি ওই অফিসে পাঠিয়ে আপস-মীমাংসার অ্যাফিডেভিটের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করাতে পাঠান। কিন্তু কর্মকর্তা মুনা আফরিণ তাতে রাজি হননি। আজ মেহবুব তাঁর ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আবার সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে হানা দেন। এ সময় তিনি আপস-মীমাংসার কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য মুনা আফরিণকে ভয়ভীতি দেখান। এই খবর পেয়ে পুলিশ ওই অফিসে গিয়ে মেহবুবসহ চার সন্ত্রাসীকে আটক করে।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, মামলা প্রত্যাহারের কাগজপত্রে জোর করে স্বাক্ষর করাতে গেলে সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র থেকে মেহবুবসহ তাঁর চারজনকে আটক করা হয়েছে। মেহবুব পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজিসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। আজকের ঘটনায় আরও একটি মামলা করেছেন জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ।

মুনা আফরিণ জানান, আগের হামলার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য মেহবুব চাপ দিচ্ছিলেন। এমনকি তিনি আপস-মীমাংসার কাগজ তৈরি করে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য আজ তাঁর অফিসে যান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই অফিস থেকে মেহবুবকে আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন তিনি। এই ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত বলে জানান।