মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের পদত্যাগ, হচ্ছে না ভোট

চট্টগ্রাম আদালত ভবনফাইল ছবি

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। এই অবস্থায় নির্বাচন পরিচালনায় গঠন করা কমিটির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মানসহ পাঁচ কর্মকর্তা একযোগে আজ মঙ্গলবার বিকেলে পদত্যাগ করেছেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা। এই কারণে ১০ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হচ্ছে না। এখন সাধারণ সভায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করবে আইনজীবী সমিতি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে আজ সন্ধ্যায় বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তারা পদত্যাগ করায় নির্বাচন পণ্ড হয়ে গেছে। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগামী ১১ কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সভায় পাঁচ সদস্যের  অ্যাডহক কমিটি গঠিত হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।

নাজিম উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘১৩২ বছরের চট্টগ্রামের বারের ইতিহাসে এই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে না। এটি খুবই দুঃখজনক। এর জন্য আমরা সিনিয়ররা দায়ী। দল–মতনির্বিশেষে সবার মধ্যে যে ভ্রাতৃত্ববোধ ছিল, সেটি হারিয়ে গেছে।’

পদত্যাগ করার কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নির্বাচনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েনের জন্য নির্বাচন কমিশন ও জেলা আইনজীবী সমিতিতে আবেদন করে। অপর দিকে বিএনপি ও জামায়াত জোট–সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ নির্বাচন কমিশন বরাবর আরেকটি আবেদন করে সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান।

পদত্যাগপত্রে বলা হয়, দুটি চিঠিই সমিতির গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন চায় না চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে একজন সদস্যও সম্ভাব্য কোনো পরিস্থিতির কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সেনাবাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হোক।

জানতে চাইলে পদত্যাগ করা নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন সম্ভব বলে মনে হয়নি। দুটি প্যানেলই গঠনতন্ত্রবিরোধী দাবিতে অনড়। তাঁরা চান না চট্টগ্রামের আইনজীবীদের সম্প্রীতিতে ফাটল ধরুক বা নির্বাচনকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটুক। তাই পাঁচ নির্বাচনী কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেছেন।

জানতে চাইলে সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পণ্ড করা হয়েছে।’

ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা সব সময় সুষ্ঠু ভোট ও গণতন্ত্রের পক্ষে। পরাজয় জেনে অনেকে পিছু হটেছে। আমরা প্রচার কাউকে বাধা কিংবা ভয়ভীতি দেখাইনি।’

গত ২৬ জানুয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও যাতে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। মোট ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৪০৪।