পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ১০ দিনেও নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান মেলেনি

দুর্ঘটনার পর করতোয়া নদীর দুই পাড়ে স্থানীয় লোকজনের ভিড়
ফাইল ছবি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনার ১০ দিনেও নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান মেলেনি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা নিজ নিজ ইউনিটে ফিরলেও একটি টহল দল নৌকাডুবির স্থান আউলিয়ার ঘাটে অবস্থান করছে।

ঘটনার চতুর্থ দিন গত বুধবার বিকেলে সর্বশেষ এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত নতুন কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল সোমবার ভোরে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের পঞ্চগড় ও দেবীগঞ্জ ইউনিটের সদস্যরাও সেখান থেকে নিজ নিজ ইউনিটে ফিরে যান।

জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী, নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ তিনজন হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার জয়া রানী (৪), দেবীগঞ্জ উপজেলার হাতিডোবা-ছত্রশিকারপুর এলাকার ভূপেন্দ্র নাথ বর্মণ (৪২) এবং বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৫)।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বাজারের পাশে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রীদের অধিকাংশই বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়।

আরও পড়ুন

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। এতে তাঁদের ৭০ জন সদস্য কাজ করেছিলেন। করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে দিনাজপুরের আত্রাই নদ পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ উদ্ধার অভিযান চলেছিল। নদীর পানির পাশাপাশি যেসব জায়গায় চর পড়েছে, সেসব স্থানে খোঁজ করছিলেন তাঁরা। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বোদা ফায়ার সার্ভিসের একটি টহল দল করতোয়া নদীর নৌকাডুবির এলাকা ও এর আশপাশে তাদের টহল অব্যাহত রেখেছে।

আরও পড়ুন

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে আরও জানা যায়, ঘটনার দিন ৪৭ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ১০ ফুট প্রস্থ (মাঝের অংশ) নৌকাটিতে মোট ১০৫ জন যাত্রী উঠেছিলেন। নৌকাডুবির পর সাঁতরে পাড়ে ওঠেন ৬ জন, জীবিত উদ্ধার হন ২৭ জন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বোদা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী আজ সকাল ১০টায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এখন শুধু বোদা ইউনিটের একটি টহল দল ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে অবস্থান করছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এই টহল অব্যাহত থাকবে।