কুষ্টিয়ায় আগুন ধরিয়ে গাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র

কুষ্টিয়ায় মহাসড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। গত সোমবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়।

এ বিষয়ে আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামলার বাদী সদর উপজেলার আলামপুর পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আটক এক আসামির দেওয়া তথ্য থেকে বাকি আসামিদের নাম পাওয়া যায়। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না।’

ওই স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার নাম আরিফুল ইসলাম (৩২)। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি একই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোষাধ্যক্ষ। আরিফুলের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ইলিয়াস খান। একই মামলায় আরিফুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলামকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি দুই মাস ধরে ঢাকায় আছেন। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার পর অবরোধ চলাকালে সদর উপজেলার ভাদালিয়া বাজারে অবস্থান করছিলেন মামলার বাদী এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম। এ সময় তিনি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বালিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড মোড়ে মশাল দিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার খবর পান। পরে সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। তাঁদের থামানোর চেষ্টা করা হলে পিকেটাররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যান। এ সময় সেখান থেকে ইমরান হোসেন বাপ্পী নামের একজনকে আটক করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ৭টি বাঁশের লাঠি, ৩টি লোহার রড, পেট্রল ভরা ২টি কাচের বোতল, ৪টি মশাল লাঠি ও ২০টি ইটের টুকরা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় গত সোমবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ। মামলায় ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারনামীয় তালিকায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আরিফুল ইসলামকে ১৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ২০০৯ সালে কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এরপর ২০১৭ সালে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ পাই। এখনো সেই পদে বহাল রয়েছি। এমনকি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে কুষ্টিয়া সদর আসনে নিজ ওয়ার্ডে নৌকার পোলিং এজেন্ট ছিলাম। সেই প্রমাণও আছে। তারপরও আমাকে নাশকতা মামলার আসামি করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এলাকায় সামাজিক দলীয় গ্রুপের কারণে প্রতিপক্ষ পুলিশকে ব্যবহার করে এটা করেছে। পুলিশের যাচাই-বাছাই করে আসামি করা উচিত ছিল। কেননা, ঘটনাটি স্পর্শকাতর। ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। পুলিশকে টেম্পারিং করে এভাবে আমাকে আসামি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

আরিফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা তিন ভাই। তাঁর ভাই আশরাফুল ইসলামকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আশরাফুল ঢাকায় কয়েক বছর ধরে থাকেন। সেখানে গার্মেন্টেস ব্যবসা করেন। তিনিও গত দুই মাস বাড়িতে আসেননি। তবে তিনি বিএনপির সমর্থক।