পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে: র‍্যাবের ডিজি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগর এলাকায় র‍্যাব-১১ কার্যালয়ে মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন। আজ দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ আস্তানাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন। তিনি বলেছেন, হিজরতের নামে বাসা থেকে বের হয়ে কিছু তরুণ আস্তানাগুলোয় জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের যৌথ অভিযান চালিয়ে এসব ধ্বংস করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন

আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র‍্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে জব্দ করা মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক।

গত ২৩ জুলাই ঢকা-চট্টগাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে ২ কনটেইনার ভর্তি ৩৭ হাজার বিদেশি মদের বোতল জব্দ করেছিল র‍্যাব-১১–এর একটি দল। আদালতের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের উপস্থিতিতে বুলডোজার দিয়ে এসব মাদক ধ্বংস করা হয়।

এ সময় র‍্যাবের প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, আগস্ট মাসে কুমিল্লা থেকে প্রায় ৫৫ জন তরুণ নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। সে সূত্র ধরে র‍্যাবের র‍্যাবের গোয়েন্দা দল তদন্ত করে ৩৫ জনের মতো তরুণ বাড়ি থেকে নিখোঁজের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। তদন্তে জানা যায়, ওই তরুণেরা হিজরতের নামে বাসা থেকে বের হয়ে চলে গেছে। সমতল ভূমিতে আগের মতো জঙ্গি তৎপরতা করার সুযোগ না পেয়ে, তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা গাঁড়ে।

খুরশীদ হোসেন বলেন, পাহাড়ি বিছিন্নতাবাদী বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে, কোনো একটি সংগঠনের ছত্রছায়ায় তারা বান্দরবানে আস্তানা গেঁড়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে—এ তথ্য নিশ্চিত হয়ে সরকারের ওপরের মহলে বিষয়টি জানালে তাঁরা অপারেশন পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেন। এরপর সেনাসদরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ড্রোনের মাধ্যমে তাদের (জঙ্গিদের) অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও ২১টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

এটি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এটি র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ অভিযান ছিল উল্লেখ করেন খুরশীদ হোসেন। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব জায়গায় তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, সেসব জায়গা শনাক্ত করে গুঁড়িয়ে দিয়ে দখলে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা এখন দুই ভাগ হয়ে ছিন্নবিছিন্ন হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে আমরা একজনের মরদেহ পেয়েছি এবং একজন আত্মসমর্পণ করেছে।’

অভিযান এখনও চলমান রয়েছে বলে জানান র‍্যাবের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো কিছুই লুকানো হবে না। আরও তথ্য পেলে সাংবাদিকদের তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

মাদকের বিষয়ে র‍্যাবের মহাপরিচালক জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে মাদক পাচার করছে। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করেন তিনি।

মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, র‍্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ, র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শায়লা।