ময়মনসিংহের ধোবাউড়া
বন্য হাতির তাণ্ডব, আতঙ্ক
দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর রানীপুর, উত্তর মাইজপাড়া, জয়রামপুর, ঘিলাগড়া, গাছুয়াপাড়া গ্রামে বন্য হাতি অন্তত ৪০টি বাড়িঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে।
ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পর এবার ধোবাউড়া উপজেলার লোকালয়ে কয়েক দিন ধরে বন্য হাতির তাণ্ডব শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে হাতির পাল। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিক ধোবাউড়া উপজেলার গারো পাহাড় লাগোয়া গোবরচলা গ্রামে হাতির পাল আসে। গ্রামের আবদুল বারেকের বাড়ির আমবাগানে হাতির পাল তাণ্ডব চালায়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতেও দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর রানীপুর, উত্তর মাইজপাড়া, জয়রামপুর, ঘিলাগড়া, গাছুয়াপাড়া গ্রামে বন্য হাতির আক্রমণ করে। এসব গ্রামের অন্তত ৪০টি বাড়ি ঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে বন্য হাতির পাল। গ্রামের মানুষ রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছেন।
হাতির আক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যে হালুয়াঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি করা হয়েছে। স্থানীয় দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর সরকারকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিতে বন বিভাগের একজন সদস্য আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধোবাউড়ার পাশের হালুয়াঘাট উপজেলায় ভারতীয় বন্য হাতির হানায় অনেক বছর আগে থেকেই মানুষের জীবন ও ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। এবার প্রথমবারের মতো ধোবাউড়া উপজেলা শুরু হয়েছে বন্য হাতির আক্রমণ। গ্রামের মানুষ রাত জেগে মশাল জ্বালিয়ে বসে থেকে পাহারা দিচ্ছেন। বর্তমানে আমন ধান কাটা হয়ে গেলেও কিছুদিনের মধ্যে বোরো আবাদ শুরু হবে। এর আগে হাতির পাল তাড়াতে না পারলে বোরোর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ১৫ দিন আগে প্রথমবার ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে হাতির পাল আসে। এর পর
থেকেই দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের গারো পাহাড়ঘেঁষা গ্রামগুলোর মানুষ হাতির আতঙ্কে রাত জেগে থাকছেন।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফৌজিয়া নাজনীন প্রথম আলোকে বলেন, ধোবাউড়া উপজেলায় এবারই প্রথম বন্য হাতি আসছে। বিভিন্ন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গ্রামবাসী হাতির পাল ঠেকাতে চেষ্টা করছেন। হাতির পালের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। ইউএনও আরও বলেন, বন্য হাতির পাল ভারতের পাহাড় থেকে আসে। হাতিগুলো ভারতে ফেরত পাঠাতে হলে ভারতের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করা প্রয়োজন হতে পারে। প্রয়োজনে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সভা আছে।