ধামরাইয়ে বেতন–বোনাসের দাবিতে কারখানার সামনে পোশাকশ্রমিকদের অবস্থান

ধামরাইয়ে বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে কারখানার সামনে পোশাকশ্রমিকদের অবস্থান। আজ সোমবার সকালেছবি: প্রথম আলো

ঈদের আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। তবে এখনো মার্চ মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস পাননি ওডিসি ক্রাফট প্রাইভেট লিমিটেডের দুই হাজারের বেশি পোশাকশ্রমিক। শ্রমিকদের অভিযোগ, চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার আন্দোলন করে বকেয়া বেতন আদায় করতে হয়েছে। এবার তাঁরা আন্দোলন করছেন গত মার্চ মাসের বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে।

ঢাকার ধামরাইয়ের সোমাভাগ ইউনিয়নে ওডিসি ক্রাফটের অবস্থান। আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকদের অনেকে দাঁড়িয়ে আছেন কারখানার মূল ফটকের সামনে। বিক্ষিপ্তভাবে জটলা করে বসে আছেন কারখানার সামনের সড়কের পাশে গাছের ছায়ায়, চায়ের দোকান, খোলা মাঠে ঘাসের ওপর। সহকর্মীদের সঙ্গে বেতন–বোনাস না পাওয়ায় নানা সমস্যার বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন কয়েকজন। কারখানার সামনে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।

বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে দাবিতে ছয় দিন ধরে আন্দোলন করছেন কারখানার শ্রমিকেরা। গত বৃহস্পতিবার মালিকপক্ষ জানিয়েছিল আজ সোমবার বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে। তবে দুপুর ১২টা বেতন-বোনাস দেওয়া হয়নি।

আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি ও আগের বছরে ডিসেম্বর মাসের অর্ধেক বেতন বকেয়া থাকায় ফেব্রুয়ারি মাসে আন্দোলন করেন শ্রমিকেরা। ওই সময় কারখানাটি ১৩ দিন বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। পরে একই মাসে দুই দফায় পুরো বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়। তাঁরা জানান, ঈদের বোনাস চলতি মাসের ৪ তারিখ এবং মার্চের বেতন ১০ তারিখের মধ্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে এর আগেই ২ এপ্রিল রাতে পূর্বঘোষণা ছাড়াই কারখানার ফটকে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই তাঁরা আন্দোলন শুরু করেন।

আরও পড়ুন

কারখানার মূল ফটকে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস বিকাশে না ঢোকা পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকবে। যেদিন বেতন-বোনাস ঢুকবে, পরদিন কারখানা খুলবে। এ ছাড়া ৮ মার্চের মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে।
এদিকে গতকাল রোববার স্বাক্ষরিত আরেকটি নোটিশ কারখানার মূল ফটকে টাঙিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে ৯ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকবে। ১৬ এপ্রিল থেকে কারখানা খোলা থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে ওডিসি ক্রাফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

সুইং সেকশনের এক অপারেটর বলেন, কারখানা চালুর পর প্রায় পাঁচ বছর ধরেই বেতন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তিন-চার মাস ধরে বকেয়া বেতন চাইলেই বন্ধের নোটিশ দেয়। সামনে ঈদ। এরপরও আগের মতোই টালবাহানা শুরু করছে।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এ বি এম রাশেদুল বারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারখানার মালিকপক্ষ জানিয়েছেন আজ (সোমবার) বকেয়া বেতনের কিছু অংশ পরিশোধ করবে। আমরা শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণভাবে অপেক্ষা করতে বলেছি।’