নরসিংদীতে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে কিশোর নিহত

নরসিংদী শহরের কাউরিয়াপাড়ার মসজিদসংলগ্ন এই সড়কে শুক্রবার দুপুরে এক কিশোরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী শহরের কাউরিয়াপাড়ায় প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ সময় আরও পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে একটার দিকে কাউরিয়াপাড়া এলাকার মসজিদসংলগ্ন সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোরের নাম সাজিন। সে শহরের কাউরিয়াপাড়া এলাকার আমির মিয়ার ছেলে। শহরের আলীজান জে এম একাডেমির ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল সাজিন। আর আহত পাঁচজন হলেন সাজিনের বাবা আমির হোসেন (৩৫), মো. তালহা (১৪), মো. ওবায়দুল (২২), রায়হান মিয়া (২৩) ও জহিরুল ইসলাম (৪৫)।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাউরিয়াপাড়ার স্পিডবোট ঘাটের ইজারা পাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষে স্থানীয় সাবেক পৌর কমিশনার আলমাছ মিয়া ও অন্য পক্ষে মতিন মিয়া নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, আগে স্পিডবোট ঘাটটির ইজারায় ছিলেন মতিন মিয়া। তবে গত বৈশাখ মাস থেকে নতুন করে ইজারা পান আলমাছ মিয়া। এর পরও মতিনের লোকজন ঘাট থেকে চাঁদা তোলা ও যাত্রীদের হয়রানি করে আসছিলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মসজিদসংলগ্ন স্থানে আলমাছ ও মতিন নিজেদের লোকজনকে নিয়ে আলোচনার জন্য বসেন। এ সময় তাঁদের কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই মতিন পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আলমাছ পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালান। ধারালো অস্ত্রের কোপে সাতজন আহত হন।

মতিন পক্ষের লোকজন চলে গেলে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই সাজিনকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নুসরাত শারমিন বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা আহত চারজনের মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আহত অন্য তিন ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আলমাছ মিয়া ও মতিন মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁদের বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, স্পিডবোট ঘাটের ইজারা–সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত কিশোরের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।