পিরোজপুর জেলার মানচিত্র

পিরোজপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রলীগের ১২ কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে শহরের বলেশ্বর সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে রাতে মিজান শিকদারের নামের এক যুবলীগ কর্মীর বাড়িতে হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার মাহামুদের কয়েকজন অনুসারী বলেশ্বর সেতু এলাকায় চা খেতে যান। রাত আটটার দিকে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে পূর্বশত্রুতার জেরে যুবলীগ কর্মী মিজান শিকদারের নেতৃত্বে একদল যুবক ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে ইফতেখার মাহামুদের অনুসারী ১২ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রাকিবুল হাসান (৩২), ইব্রাহিম খান তামিম (২১), ইসা শেখ (২৮), লিওন আল জাবির (২৮) ও আহমেদ কাফিকে (২৬) পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনার জেরে ওই রাতে পৌরসভার উত্তর নামাজপুর মহল্লায় মিজান শিকদারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে মিজান শিকদারকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করেছেন।

পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার মাহামুদ বলেন, ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী মোটরসাইকেলে করে বলেশ্বর সেতু পার হয়ে পিরোজপুর শহরে ফেরার পথে সেতুর ঢালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা মিজান শিকদার তাঁর লোকজন সঙ্গে নিয়ে হামলা চালান। এ সময় মিজানের সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ জন ছিলেন। তাঁদের কাছে ধারালো অস্ত্র ছিল। হামলায় আহত ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীর শরীরে ধারালো অস্ত্রের জখম হয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মিজান শিকদার বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার পরে বলেশ্বর সেতু এলাকায় দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।’

পিরোজপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রহিতোষ দাস বলেন, আহত ব্যক্তিদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপের জখম আছে। তাঁরা এখন আশঙ্কামুক্ত। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবির মো. হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দুটি পক্ষ আছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার মাহামুদ পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে যুবলীগ কর্মী মিজান শিকদার পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমানের অনুসারী হিসেবে নিজের পরিচয় দেন।