কক্সবাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের মুখে মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ, যাত্রীদের দুর্ভোগ
কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি মাদ্রাসার সুপারের পদত্যাগের দাবিতে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খুরুলিয়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার সামনে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শিক্ষার্থী অবরোধ করেন।
টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের খরুলিয়া ও বাংলাবাজার স্টেশন পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কক্সবাজারমুখী শতাধিক বাসে ভ্রমণে আসা বিপুলসংখ্যক পর্যটকসহ হাজারো যাত্রীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘটনাস্থল থেকে ওসি ফায়জুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে মাদ্রাসা সুপার পদত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সুপার মাওলানা আবদুল্লাহ আল আমিনের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা অবরোধ তুলে নেবেন না। সুপার দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। সুপারের অপকর্মের কারণে মাদ্রাসায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সুপারের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা এক মাস ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। তাই আজ মঙ্গলবার সুপারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।
সকাল ১০টা থেকে খুরুলিয়া বাজার এলাকায় আটকা পড়েন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সুবেল আহমেদ। তিনি কুমিল্লার একটি আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন। একটার দিকে তিনি ঘটনাস্থল থেকে প্রথম আলোকে বলেন, তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে বহু নারী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আশপাশের টয়লেটব্যবস্থা না থাকায় নারীরা বেশি দুর্ভোগে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা একটি বাসের যাত্রী সোহেল আহমদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করে আইনানুগ ব্যবস্থার নিয়ম আছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে যাত্রীদের জিম্মি করে অধিকার আদায়ের এমন ঘটনা বন্ধ করা উচিত।
মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফায়জুল আমিন নোমান। তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালান পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে ওসি ফায়জুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে মাদ্রাসা সুপার পদত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক।