আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হট্টগোল

সভায় হট্টগোল শুরু হলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন সংসদ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। আজ সোমবার দুপুরে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষেছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি করে সভা শেষ করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

সভায় উপস্থিত অন্তত ১১ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে সভা শুরু হয়। সভায় কয়েকজনের পর বক্তব্য দেন আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জোবাইদুল্লাহ। গত বৈঠকের কার্যবিবরণী হাতে নিয়ে তিনি বলেন, কার্যবিবরণীর ৭ নম্বর কলামে লেখা হয়েছে, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ। কিন্তু তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নন। এটি সংশোধন করতে হবে।

এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক মাইক্রোফোন হাতে নেন পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক মঞ্চ নয়, সংগঠনের মিটিংও নয়। এখানে এ ধরনের প্রস্তাব রাখা অনৈতিক।’

সভায় জোবাইদুল্লাহকে অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি উল্লেখ করে আবুল কাশেম আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যদি সাজাপ্রাপ্ত আসামি সদস্য হয়ে উপস্থিত থাকেন, তাহলে এখানে কিসের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা হবে?’

আবুল কাশেমের বক্তব্যের পরপরই বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দুটি পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলতে শুরু করেন।

সভায় উপস্থিত চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম এবং পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে ইউএনও সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। ফলে সভায় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের অনেকেই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি।

চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগে বর্তমানে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম। তাঁর বিরোধী পক্ষটি বর্তমান সংসদ সদস্য ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমকে ঘিরে সক্রিয় রয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জোবাইদুল্লাহ গত সংসদ নির্বাচনের পর সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের সুপারিশে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হয়েছেন।

জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে দুটি পক্ষের কথা-কাটাকাটি হয়েছে। পরে দুই পক্ষ শান্ত হয়ে চলে গেছে।