দেশেই ভোজ্যতেলের প্রায় অর্ধেক উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
তিন বছরের মধ্যে দেশে ৪০-৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, মাঠপর্যায়ে আমাদের কৃষি কর্মকর্তা ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।’
আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা শুরু হয়েছে। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে ৩০-৪০ বছর আগে সবাই মূলত রান্নায় শর্ষের তেল খেত। তখন শর্ষের ভালো জাত ছিল না, উৎপাদন ছিল না, মানুষ বাড়ছিল। পরে সবাই ধান আবাদে চলে যায়। বিদেশ থেকে সয়াবিন ও পাম তেল সস্তায় আমদানি করে তেলের চাহিদা মেটানো হতো। কিন্তু এখন এমন অবস্থা হয়েছে, দেশ পুরোপুরি তেল আমদানিনির্ভর হয়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, আশার কথা হচ্ছে, এই সমস্যা সমাধানে দুটি সাফল্য এসেছে। স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদিত হবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা অনেক ভালো শর্ষের জাত উদ্ভাবন করেছেন। আগে বিঘায় দেড় থেকে দুই মণ শর্ষে হতো, এখন সেটা ছয় থেকে সাত মণ হচ্ছে। আগে শর্ষে ছিল ছোট ছোট, কিন্তু এখন আকারেও বড় হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমনের পরেই শর্ষে লাগানো হয়।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, সাধারণত আমন ধান হয় ১৪০ বা ১৬০ দিনে। এ কারণে সময় বেশি লাগায় কৃষকেরা পরে আর শর্ষে লাগাতে চান না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন জাত আবিষ্কার করেছেন, যেটা ১১০ থেকে ১১৫ দিনেই হয়। কাজেই আমন এবং বোরো ধানের মধ্যে যে সময়টা পড়ে থাকে, সেই সময়ের মধ্যে শর্ষে আবাদ করা সম্ভব। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে শর্ষে এসে যায়। এতে শর্ষে তুলে বোরো কৃষকেরা আবাদ করতে পারেন। কৃষক এই শর্ষে থেকে অতিরিক্ত ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজির আলম।