মা–বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় ছাত্রদল নেতা নুরে আলম

মো. নুরে আলম

ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ভোলা শহরের মধ্য চরনোয়াবাদ এলাকায় আলতাজের রহমান কলেজ মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা–বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে নুরে আলমকে।

এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে নুরে আলমের মরদেহ ভোলায় পৌঁছালে বিএনপির নেতা–কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় লাশের গাড়ি নিয়ে তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় নেতা–কর্মীরা নুরে আলমের মরদেহ বহনকারী ফ্রিজিং গাড়িসহ কয়েক শ মোটরসাইকেল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন। নুরে আলমের জানাজায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ভোলা শহরের মধ্য চরনোয়াবাদ এলাকায় আলতাজের রহমান কলেজ মাঠে মো. নুরে আলমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা–কর্মীসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন
ছবি: প্রথম আলো

জানাজায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আমিনুল হক, নির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীরসহ স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, নুরে আলম দলীয় কোনো প্রোগ্রামে নিহত হননি। সাধারণ মানুষের জীবনে সুখ–শান্তি আনতে তিনি নিজের জীবন দিয়ে গেছেন। একদিন না একদিন এ হত্যার বিচার হবে। তিনি আরও বলেন, কেন এই মৃত্যু? কেবল নিজেদের অবৈধ শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই এ তরুণকে হত্যা করা হয়েছে।

জানাজায় অংশগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘অন্যায়ভাবে, অযাচিতভাবে গুলি করে আমার সহযোদ্ধাকে হত্যা করায় আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছি। কারণ, আমরা শোকাহত। কিন্তু একদিন আমরা এ শোককে শক্তিতে রূপান্তর করব ইনশা আল্লাহ। আজকে নুরে আলমের জানাজায় একটি শপথ করতে চাই, যারা আমার প্রাণপ্রিয় সহযোদ্ধাকে হত্যা করেছে, যদি বেঁচে থাকি বাংলার মাটিতে এ হত্যার বিচার করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।’

ভোলার মধ্য চরনোয়াবাদ এলাকায় আলতাজের রহমান কলেজ মাঠে মো. নুরে আলমের জানাজায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা–কর্মীসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন
ছবি: প্রথম আলো

গত ৩১ জুলাই ভোলায় পুলিশ–বিএনপির সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. আবদুর রহিম নিহত হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম। প্রথমে তাঁকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখান থেকে ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয় নুরে আলমকে। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিন দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে গতকাল বুধবার বিকেলে মারা যান। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন নুরে আলম। তাঁর স্ত্রী ও পাঁচ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।