কেশবপুরে মিষ্টিপ্রেমীদের প্রিয় ঠিকানা ‘চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডার’

যশোরের কেশবপুরের চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডারের ল্যাংচা মিষ্টিছবি: প্রথম আলো

বাবা সীতা নাথ দত্তের হাত ধরে ছোটবেলায় মিষ্টির দোকানে যেতেন সুবোধ দাস। মা কার্তায়নী দত্তও ভালো মিষ্টি বানাতেন। তাঁদের কাছ থেকে মিষ্টি বানানো শিখেছেন তিনি। সেই জ্ঞান ছেলেদের দিয়েছেন। এভাবে তিন পুরুষ ধরে মিষ্টি বানানো ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত সুবোধের পরিবার। যশোরের কেশবপুরে তাদের ‘চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডার’ মিষ্টিপ্রেমীদের প্রিয় ঠিকানা।

১৯৩৬ সালের দিকে সুবোধ দত্তের পরিবার কেশবপুরে কপোতাক্ষ নদের ধারে চিংড়া বাজারে ‘চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামে একটি দোকান দেয়। পরে কেশবপুর শহরে একই নামে দোকান শুরু করেন তাঁরা। দুবার দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়। এখন শহরের ত্রিমোহিনী মোড়ে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সামনে তাদের দোকানটির অবস্থান। মোড়টির নাম হয়ে গেছে চিংড়া মোড়।

আরও পড়ুন

সুবোধ দত্তের তিন ছেলে উদয় দত্ত, সঞ্জয় দত্ত ও মৃত্যুঞ্জয় দত্ত এখন মিষ্টির ব্যবসা দেখভাল করেন। উদয় দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সব সময় ক্রেতাদের ভালো মিষ্টি দেওয়ার চেষ্টা করেন। ইলিশ পেটি, ল্যাংচা, ক্ষীর কদম, সর পুরিয়া, সন্দেশ, স্পঞ্জের রসগোল্লা, ছানার জিলাপি, খেজুর গুড়ের প্যারা, চমচম, কালোজাম, ছানার পোলাও, ক্ষীর সন্দেশ, রাজভোগ, পানতোয়ার মতো নানা মিষ্টি বানান তাঁরা। মানে ভালো হওয়ায় ক্রেতারাও এসব মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন।

‘চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডার’ এর ছানার পোলাও
ছবি: প্রথম আলো

মৃত্যুঞ্জয় দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দোকানের মিষ্টি আশপাশের এলাকার মানুষ অনেক পছন্দ করেন। বেড়াতে এলে অনেকে তাঁদের দোকান থেকে মিষ্টি নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা দেশে এলে যাওয়ার সময় তাঁদের মিষ্টি কিনে নিয়ে যান। অনেকে বিদেশে থাকা স্বজনদের কাছে তাঁদের মিষ্টি পাঠান।

‘চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডার’ থেকে নিয়মিত মিষ্টি কেনেন আলতাপোল গ্রামের মাসুদুজ্জামান। তিনি বলেন, এই দোকানের মিষ্টি কেশবপুরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মিষ্টি। এ দোকানের সন্দেশ ও স্পঞ্জের রসগোল্লা খুবই ভালো। রসগোল্লায় মিষ্টি কম, এটাই এই মিষ্টির বিশেষত্ব। এ ছাড়া টক মিষ্টি দই, মিষ্টি দই, টক দই—এগুলো তো আছেই।

ছোট ছোট এই মিষ্টিগুলো চিংড়া মিষ্টান্ন ভান্ডারে খেজুর মিষ্টি নামে পরিচিত
ছবি: প্রথম আলো

আরেক ক্রেতা রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইমরান হোসেন বলেন, এ দোকানের মিষ্টির মান অনেক ভালো বলে ভিড় লেগেই থাকে। বেশি দেরি করে এলে পছন্দের মিষ্টি পাওয়া যায় না, আগেই ফুরিয়ে যায় বলে!