নজরুলের লাশের অপেক্ষায় স্বজনেরা

নজরুল ইসলামের স্বজনদের আহাজারি। বুধবার যশোর সদর উপজেলার ঘুণী গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলাম ওরফে নাজমুলের (২৮) বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শেষবারের মতো নজরুলের মুখ দেখতে তাঁর লাশের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনেরা।

নজরুলের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার ঘুণী গ্রামে। ওই গ্রামের কওসার মোল্লার ছেলে তিনি। সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর তাগিদে বছরখানেক আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান নজরুল। সম্প্রতি ১০ দিনের ছুটি পেয়ে নজরুল ওমরাহ পালন করতে যান। তবে নজরুলের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পথে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। নজরুলের এই অকাল মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

বিলাপ করে নজরুলের মা খাদিজা বেগম বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সোনা বাবাটা কত ভালো ছিলো। গত সোমবার আমারে ফোন করে বললো, “মা, আমি ১০ দিনের ছুটি পেয়েছি। ওমরা করতে যাবো। তুমি দোয়া কোরো আমার জন্য।” কিন্তু ছেলেটার আর ওমরা করা হলো না। তার আগেই বাস দুর্ঘটনায় ছেলেটা আমার মারা গেল। আমার নাজমুলরে ফিরিয়ে দাও। শেষবারের মতো চোখের দেখা একবার দেখতে চাই।’

আরও পড়ুন

সাত ভাইবোনের মধ্যে নজরুল পঞ্চম। গত বছর তিনি সৌদি আরবে যান। সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। গত সোমবার ওমরাহ পালনের জন্য বাসে করে সৌদি আরবের মক্কার উদ্দেশে রওনা দেন। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে ইয়েমেন সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ওই বাসের ১৮ বাংলাদেশি যাত্রী নিহত হন।

নজরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

নজরুলের বাবা কওসার মোল্লা বলেন, ‘আমার অন্য সন্তানদের তুলনায় নজরুল ছিল শান্ত প্রকৃতির। বিদেশ যাওয়ার কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছিল। নিজে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেই বিদেশ যায়। আমার সেই ছেলেটা এভাবে চলে যাবে, কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি।’

নজরুলের বড় ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন বউ রেখে বিদেশ গেছিল নজরুল। ওর (নজরুল) কোনো সন্তান নেই। আমাদের সন্তানদের নিয়েই ওর যত ভাবনাচিন্তা ছিল। আমাদের ছেলেমেয়েদের যত আবদার, নজরুলই পূরণ করত।’