বিএনপি নেতা কারাগারে, ফেসবুকে প্রতিবাদ আওয়ামী লীগ নেতার

বিএনপির নেতাকে নিয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস
ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা বিএনপির এক নেতা রাজনৈতিক মামলায় এখন কারাগারে। এ ঘটনায় বিএনপি নেতার পক্ষ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। এ নিয়ে সমালোচনার মুখেও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ খান।

৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ খান তাঁর ফেসবুক আইডিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. মহিব উল্লাহর ছবিসহ একটি পোস্ট দেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘অপরাধীর বিচার হোক। তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পান, সেদিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজর দেওয়া উচিত। মহিব উল্লাহ ভাই হবিগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে যে মামলা হয়েছে এর সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। তাঁর জামিন এবং ওই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি কামনা করছি।’

এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সরগরম উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি। তবে মাসুদ খানের কথা, ‘একজন ভালো মানুষকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এ কারণে তাঁর পাশে আমার এ অবস্থান।’

মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘মাসুদ খান ফেসবুকে বিএনপি নেতার পক্ষে যে সাফাই গেয়েছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাঁকে আমাদের দলের কেউ বলে আমি মনে করি না। তা ছাড়া তিনি গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হন। তাঁর দলীয় পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন আছে।’

মামলার এজাহার ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত ১৯ আগস্ট বিকেলে হবিগঞ্জ শহরে পদযাত্রা বের করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য এবং বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় ২০০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং হাজারের বেশি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে দুটি মামলা হয়। পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দুটি হয়েছে।

ওই ঘটনার পরদিন ২০ আগস্ট বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়। মামলার দেড় শতাধিক আসামি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। এই জামিনের মেয়াদ শেষ হলে গত রোববার বিএনপির নেতা মহিব উল্লাহসহ ১৫১ জন আসামি আদালতে হাজির হন। আদালত ১৫ নেতা–কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।