দেড় বছরের মেয়েকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগে মা আটক

লাশ উদ্ধারপ্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক মায়ের বিরুদ্ধে দেড় বছরের মেয়েকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশুর নাম নুসরাত। অভিযুক্ত আয়েশা আক্তার শিশুটির মা। গতকাল রাতেই তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার বাসিন্দা আয়েশা প্রেম করে ২০১৯ সালে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার উমর ফারুককে বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও মেয়ে (নুসরাত) আছে। ২ বছর আগে এই দম্পতি ঢাকা ছেড়ে ভৈরবে যান। সেখানে একটি জুতার কারখানায় কাজ নেন ফারুক। ওই কারখানায় কাজ করতেন আলমগীর নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। একই কারখানায় কাজের সুবাদে আলমগীরের সঙ্গে ফারুকের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে আয়েশার সঙ্গেও আলমগীরের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে বিবাহ–বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান আয়েশা ও আলমগীর। আলমগীরেরও স্ত্রী-সন্তান আছে। বিষয়টি জানার পর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেলাবতে ফিরে যান ফারুক। তবে আয়েশা দেড় মাস আগে মেয়ে নুসরাতকে নিয়ে আলমগীরের কাছে যান। সেখানে তাঁরা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ভৈরব পৌর শহরের লক্ষ্মীপুরে এক কক্ষের বাসায় বসবাস শুরু করেন। ঈদের আগের দিন আয়েশাকে সেখানে রেখে আলমগীর নিজের এলাকা কালিকাপ্রসাদ গ্রামে স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরে যান।

ঈদের দিন গতকাল রাত ৯টার দিকে এক প্রতিবেশী আয়েশার ঘরে গিয়ে দেখতে পান, শিশু নুসরাতের মরদেহ পড়ে আছে। পাশে বসে আছেন আয়েশা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আয়েশাকে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা শিশুসন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী। তিনি বলেন, ‘আমরা আয়েশার সঙ্গে কথা বলেছি। সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। টাকা না থাকায় সন্তানের ঠিকমতো লালন-পালন করতে পারছিলেন না। ছেলেসন্তানটি নিজের কাছে নেই। আবার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকলেও আলমগীর তখনো আয়েশাকে বিয়ে করেননি। সব মিলিয়ে আয়েশা চাপে ছিলেন।’

খন্দকার ফুয়াদ রুহানী আরও বলেন, মরদেহে গলায় আঁচড় আছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।  

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় উমর ফারুকের বাবা ও আয়েশার শ্বশুর আবুল কালাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়নাতদন্তের জন্য নুসরাতের মরদেহটি কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।